শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)-র অন্যান্য প্রকল্পে দুর্নীতির মামলার মতো নিকাশি প্রকল্পে দুটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি নিয়ে অভিযোগের বিষয়টিও সিআইডির হাতে তুলে দিতে চলেছে পুলিশ। এর আগে এসজেডিএ থেকে দুর্নীতির অভিযোগে আর ৮ টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেগুলোও সিআইডিকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়েছে। তবে তদন্ত শেষ করে এখনও চার্জশিট দিতে পারেনি তারা। এ বার ফের এই মামলাটিও সিআইডি’র হাতে তাঁরা দিচ্ছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “এই মামলার ক্ষেত্রে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হবে।”
বুধবার প্রধাননগর থানায় মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে ফুলবাড়ি এবং নৌকাঘাট এলাকায় নিকাশি প্রকল্পে দুটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি ক্ষেত্রে ৩ কোটি টাকারও বেশি নয়ছয়ের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ করেন এসজেডিএ’র সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দীপেশ বণিক। প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে দামি ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্রাংশ কেনার কথাজানানো হয়। অথচ ওই সমস্ত যন্ত্রাংশ সরবরাহই হয়নি বলে অভিযোগে জানানো হয়েছে। অথচ কাজ না-হলেও ওই সমস্ত যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে এবং সরবরাহ হয়েছে বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ মিটিয়ে দিয়েছেন এসজেডিএ’র আধিকারিকরাই। এমনকী কাজ না হলেও সমস্ত কিছু করা হয়েছে বলে ঠিকাদার সংস্থাকে শংসাপত্রও দেওয়া হয়েছে কী ভাবে সে সমস্ত নিয়েও অজিট রিপোর্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সে কথা উল্লেখ করেই এসজেডিএ’র তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এসজেডিএ’র আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে ঠিকাদার সংস্থার যোগসাজশের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে। এসজেডিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরো নামে কলকাতার যে সংস্থাকে বরাত দেওয়াহয়েছিল আগেও তাদের নামে অভিযোগ হয়। ওই সংস্থার কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ছেলেকে এসজেডিএ’র অপর মামলাগুলিতে আগেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা খেন জামিনে রয়েছেন। এসজেডিএ’র ৩ জন বাস্তুকার, প্রাক্তন সিইও তথা গোদালা কিরণ কুমার মালদহের জেলাশাসক থাকার সময় তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সব মিলিয়ে ১৪ জনকে। সেই মামলা চলছে। নতুন করে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরোর কর্ণধারদের ফের গ্রেফতারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে পুলিশের আধিকারিকদের কয়েকজন জানিয়েছেন।
২০১২-১৩ সালের অডিটে প্রশ্ন উঠলেও থানায় অভিযোগ দায়ের করতে এতদিন লাগল কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু বলেন, “এসজেডিএ নানা প্রকল্পে যে দুর্নীতি হয়েছে তা স্পষ্ট। যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে শুধু তাই নয়। আনারস কেন্দ্রে কোল্ড স্টোরেজ তৈরি, বাগডোগরায় প্যারিসেবল কার্গো তৈরির বিষয় নিয়েও মানুষের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া অসঙ্গতি থাকলে অডিট রিপোর্টে জানতে চাওয়া হয়। সে সব নিয়ে অনিয়ম থাকলে অভিযোগ জানাতে দেরি হচ্ছে কেন বুঝছি না।”