পুরসভা দখল করে মুকুলের দাবি জেলাপরিষদও পাবেন

নির্বাচনে ২০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৬টি আসনে দলের প্রার্থীরা জিতলেও আলিপুরদুয়ার পুরসভার দখল নিল তৃণমূল। কংগ্রেসের ৬ জন তৃণমূলে সামিল হওয়ার পরে বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল অনাস্থা ডেকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট বাম পুরবোর্ডকে সরিয়ে দিয়েছে। পুরপ্রধান হয়েছেন তৃণমূলের আশিস দত্ত। ভাইস চেয়ারপার্সন হয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুমাদেবী।

Advertisement

নিলয় দাস

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৮
Share:

মুকুল রায় ও সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে আলিপুরদুয়ার পুরসভার নতুন পুরপ্রধান ও উপ পুরপ্রধান। —নিজস্ব চিত্র।

নির্বাচনে ২০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৬টি আসনে দলের প্রার্থীরা জিতলেও আলিপুরদুয়ার পুরসভার দখল নিল তৃণমূল। কংগ্রেসের ৬ জন তৃণমূলে সামিল হওয়ার পরে বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল অনাস্থা ডেকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট বাম পুরবোর্ডকে সরিয়ে দিয়েছে। পুরপ্রধান হয়েছেন তৃণমূলের আশিস দত্ত। ভাইস চেয়ারপার্সন হয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুমাদেবী। দীপ্তবাবুকে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার শহর কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে বোর্ড গঠনের সাক্ষী হতে আলিপুরদুয়ার উপস্থিত হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। মুকুলবাবু বলেন, “আমরা পুরবোর্ড দখল করেছি। শীঘ্রই আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের প্রথম বোর্ডও আমরা গঠন করব।”

Advertisement

কিন্তু প্রস্তাবিত জেলা পরিষদের ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এককভাবে মাত্র ১টি আসনে জিতেছে। তা হলে কী ভাবে তা দখল করার স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল? বিরোধীদের অভিযোগ, অন্য দলের সদস্যদের নানা কৌশলে, হুমকি দিয়ে ভাঙিয়ে নিজেদের দিকে টেনে কাজ হাসিল করতে চাইছে তৃণমূল। এই ব্যাপারে মুকুলবাবুর দাবি, “সকলে তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখেই সামিল হচ্ছেন। এটা নিয়ে অযথা কুৎসা হচ্ছে।” তৃণমূল শিবিরের খবর, জেলা পরিষদের কংগ্রেস ও সিপিএমের ৭ জন সদস্য তৃণমূলে সামিল হয়েছেন। জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে আরেকজন সদস্য দরকার তৃণমূলের। তা পেতে সমস্যা হবে না বলে তৃণমূল শিবিরের দাবি। আগামী ১৬ অক্টোবর জেলা পরিষদ বোর্ড গঠনের দিন ধার্য করেছে প্রশাসন।

জেলা পরিষদ গঠনের জন্য তৃণমূল পুলিশের এক ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারকে সামনে রেখে আসরে নেমেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বামেরা। গত ২২ অক্টোবর আরএসপি দলের নির্বাচিত সদস্য সমরেন্দ্র তিরকেকে থানায় ডেকে এক জন উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা নানা প্রলোভন দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেবার প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ। ওই সদস্যকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে এক জন তৃণমূল নেতার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও তিনি দেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে জেলা জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়।

Advertisement

গত রবিবার আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে নিরাপত্তার দাবি জানান বামেরা। ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, “বামেদের এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়।”

আলিপুরদুয়ার জেলা সিপিএম-এর সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মনে করেন, দল ভাঙানোর চেষ্টা চলছে। তাঁর আশঙ্কা, “যাঁরা আমাদের দলে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যে কেউই তৃণমূলে কাল যোগ দিতে পারেন। যে ভাবে সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে দল ভাঙানোর চেষ্টা চলছে, তাতে অনেকেই অসহায় বোধ করছেন।” কৃষ্ণবাবুর পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ক্ষমতা থাকলে ওই সমস্ত সদস্যদের পদত্যাগ করিয়ে ভোটের ময়দানে লড়ুক তৃণমূল। আরএসপি-র জেলা সম্পাদক সুনীল বণিকের অভিযোগ, “তৃণমূল যে ভাবে প্রলোভন দিচ্ছে এবং মামলা মোকদ্দমার ভয় দেখাচ্ছে তা অভাবনীয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন