পেঁয়াজের সংরক্ষণে ‘জিরো এনার্জি স্টোরেজ’ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে উদ্যান পালন দফতর। চাষিদের সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই সংরক্ষণাগার তৈরির প্রকল্পে কাজ হবে। ইতিমধ্যে দফতরের কোচবিহার জেলার পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পরিকল্পনা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। দফতর সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে চাষিদের মধ্যে থেকে উপভোক্তাদের বেছে নেওয়া হবে। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার প্রকল্পে অর্ধেক টাকা দেবে রাজ্য সরকার। বাকি অর্ধেক উপভোক্তাকে দিতে হবে। মহারাষ্ট্র-সহ উত্তর ভারতের নানা রাজ্যে ওই প্রকল্প সফল হয়েছে। দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “পেঁয়াজের উত্পাদন বাড়াতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলে চাষিরা চাষেও উত্সাহিত হবে। আশা করছি সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম জেলায় অনেকটা কম থাকবে।”
দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙার যে সব অঞ্চলে পেঁয়াজ চাষ হয় সেখানে ‘জিরো এনার্জি স্টোরেজ’ তৈরি করার পরিকল্পনা হয়েছে। প্রথমে ১২টি সংরক্ষণাগার তৈরি করা হবে। সেগুলি সফল হলে আরও তৈরি করা হবে। মূলত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ওই স্টোরেজ তৈরি করা হয়। দু’পাশের অংশে এক ধরনের ওষুধ দিয়ে শোধন করে নেওয়া হয়। তার পরেই সেখানে পেঁয়াজ রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
কোচবিহার জেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। প্রায় সাড়ে দশ হাজার টন উত্পাদন হয়। জেলার চাহিদা অনুযায়ী সম পরিমাণ পেঁয়াজ বাইরের রাজ্য বিশেষ করে মহারাষ্ট্র থেকে নিয়ে আসতে হয়। যে কারণে কোচবিহারে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই বেশি হয়। ওই পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ হলে স্থানীয় চাষিরা উত্পাদনে আগ্রহী হবে বলে আশা করছেন উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকরা।
কয়েক জন চাষি জানান, সংরক্ষণ হলে তাঁরা তুলনামূলক ভাবে বেশি দাম পাবেন, তাতে উত্সাহিত হবেন। মহারাষ্ট্র থেকে পেঁয়াজ আনতে গিয়ে গাড়ি ভাড়া অনেকটাই পড়ায় বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। জেলায় এক হেক্টর জমিতে ১৪-১৫ টন পেঁয়াজ উত্পাদন হয়। এবারে আধুনিক মানের বীজ চাষিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাতে হেক্টরে ২০ টন পেঁয়াজ উত্পাদন হওয়ার আশা রয়েছে। কোচবিহারের ঢাংঢিংগুড়ির পেঁয়াজ চাষি বীরেন দাস বলেন, “সংরক্ষণের ব্যবস্থা ও আধুনিক মানের বীজ হাতে পেলে আমরা আরও বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করব।”