বন্ধ মান্ডি। নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরে গঙ্গারামপুরের পর বালুরঘাট। এখানকার বিধায়ক তথা পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর বিধানসভা এলাকা হিলির তিওড় এলাকাতেও গত দেড় বছর ধরে সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে কিসানমান্ডি। জেলা প্রশাসন আজও তা চালু করতে পারেনি। গঙ্গারামপুরের মতোই তিওড়েও তৃণমূল নেতাদের একাংশের বাধায় মান্ডি চালু করা যাচ্ছেনা বলে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘জেলায় যে ছ’টি কিসানমান্ডি তৈরি করে চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো তিওড়ের ওই সুদৃশ্য বিশাল আয়তনের কিসানমান্ডি। ২০১৪ সালের ২৬ জুন মুখ্যমন্ত্রী ওই কিসানমান্ডির উদ্বোধন করেন। ৬ একর জমির উপর প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করে তিওড়ের ওই মান্ডি তৈরি করা হয়। এতদিনেও চালু না হলেও কিসানমান্ডির ৩ জন কর্মী, পাহারাদারের বেতন, জল ও বিদ্যুতের খরচ এবং রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকা সরকারের খরচ হচ্ছে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন। কিসানমান্ডিটি চালু না হওয়া নিয়ে এখানেও তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা না করে কিসানমান্ডি তৈরি করায় তা চালু নিয়ে সমস্যা হচ্ছে বলেও বিরোধীরা কটাক্ষ করেছে।
গঙ্গারামপুরের কালদিঘি এলাকায় কিসানমান্ডি চালুর বাস্তবতা নিয়ে সরব হয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসনের তোপের মুখে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা গঙ্গারামপুর পুরসভার উপ পুরপ্রধান অমল সরকার। পুরনো বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ নিয়ে একটি ক্লাবকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে। অমলবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘ক্লাবের জন্য সরকারি টাকায় তৈরি কিসানমান্ডি চালু আটকে থাকবে কেন? শীঘ্রই তা চালু হবে।’’ এদিন গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায় বলেন, ‘‘ওই ক্লাব এবং পুর প্রতিনিধি সকলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সামনের এক সপ্তাহের মধ্যে কিসানমান্ডিটি চালু করা হবে। ধীরে ধীরে ওই মান্ডিতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
এ দিকে হিলি ব্লকের তিওড়ে তৈরি কিসান মান্ডি চালু না হওয়ার বিষয় নিয়ে এদিন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মান্ডিটি চালু করতে হবে। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব।’’
আরএসপির জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘তিওড় বাজারে চালু দোকান বাজার রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যেকে টাকা খরচ করে দোকান তৈরি করছেন। তারা কেন দূরবর্তী এলাকায় ধান চাল টেনে কিসানমান্ডিতে যাবেন? হিলিরহাট, পাঞ্জুলহাটের ব্যবসায়ীর কেন ১৫ কিলোমিটার দূরে তিওড়ের মান্ডিতে যাবেন?’’ তাঁর মতে এই সমস্যা আগে বুঝে মান্ডি তৈরি করলে তা চালু নিয়ে সমস্যা দেখা দিত না। যদি প্রত্যেকটি কিসানমান্ডির সঙ্গে একটি করে হিমঘর তৈরি করা হয়, তবে কৃষককেরা মান্ডিতে গিয়ে বেচাকেনা করবেন। এবং অবিক্রিত জিনিস হিমঘরে সংরক্ষণ করার সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন বিশ্বনাথবাবু।