প্রায় পাঁচ বছর ধরে বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পথে নামলেন এসাকার মহিলারা। ওই দাবিতে তাঁরা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন। মঙ্গলবার ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তুড়িবাড়ি এলাকায় অবরোধের ঘটনাটি ঘটে। বিক্ষোভকারী মহিলাদের বক্তব্য, “ওদলাবাড়ি বাজার থেকে ১৬ কিমি দূরে পাথরঝোরা চা বাগান যাওয়ার পুরো রাস্তাটাই বেহাল। দীর্ঘ দিন দাবি করা হলেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।”
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওদলাবাড়ি বাজার থেকে ডিপো পাড়া হয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ওই রাস্তা পাথরঝোরা চা বাগানে গিয়ে শেষ হয়। রাস্তাতেই রয়েছে তুড়িবাড়ি বস্তি। গত পাঁচ বছর ধরে রাস্তাটির কোনও সংস্কার না হওয়ায় পিচের চাদর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গোটা রাস্তাটারই এই দশা। তার ওপর এই রাস্তা দিয়েই চেল, ঘিস নদীর পাথর ও বালি ভর্তি বোঝাই ট্রাক নিয়মিত চলাচল করে। এর পাশাপাশি তুড়িবাড়ি এলাকাতে পাথরগুড়ো করার একাধিক কারখানা থাকায়, এই ভাবে ট্রাক চলায় রাস্তাটি আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। তার উপর বৃষ্টিতে বড় গর্ত তৈরি হয়ে, পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে অবরোধ শুরু করেন এলাকার ৬০-৭০ জন মহিলা। বেলা সাড়ে ১২টা অবধি এই অবরোধ চলে। মালবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। তবে দ্রুত সংস্কার না হলে বড় মাপের আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছেন মহিলারা। তাঁরা জানান, ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও ভোট পার হলেও আজ কাজ হয় না।
এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম বলেন, “বিষয়টি জানি। আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দাবিটি দেখছি। আর্থিক বিষয়টি দেখে নিয়ে দ্রুত ওই রাস্তাটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তুড়িবাড়ি এলাকার বাসিন্দা তথা অবরোধে সামিল রঞ্জিতা ছেত্রী বলেন, “ওদলবাড়ি বাজার হয়ে সর্বত্র যেতে হয়। এটাই আমাদের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। রাস্তাটাই এতটাই খারাপ যে সাত কিমি দূরের ওদলাবাড়ি যেতেই অটোতে একঘন্টা লেগে যাচ্ছে। ওদলাবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে রোগীদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।” অবরোধকারী পবিত্র ছেত্রী জানান, ওদলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, ডাকঘর ওই রাস্তা দিতেই রোজ যেতে হয়। প্রায় ১০ হাজারের বেশি এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। মানাবাড়ি চা বাগানও ওই রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।
ওদলাবাড়ির পরিবেশপ্রেমী সংস্থার সদস্য সুজিত দাস বলেন, “এই রাস্তাটি ভার করে সংস্কার করা হলে পাথরঝোরা দিয়ে কালিম্পঙ মহকুমার ঝান্ডি, লাভার সঙ্গেও যোগাযোগ সহজ হবে। পর্যটনের ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। প্রশাসনিক কর্তাদের বিষয়টি দেখা দরকার।”