ফের সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষ মালদহে, জখম ১১

রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত মালদহে। মানিকচক, বৈষ্ণবনগরের পর এবার তৃণমূল-সিপিএমের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পুরাতন মালদহের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তুঁতবাড়ি এলাকা। অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো-সহ বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি উঠেছে শ্লীলতাহানির অভিযোগও। ব্লক তৃণমূল সভাপতির নেতৃত্বে এক সিপিএম নেতার বাড়িতে হামলার সময় সিপিএম নেতার পুত্রবধূ, এক আত্মীয়া-সহ এক প্রতিবেশীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন দু’পক্ষের ১১ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত মালদহে। মানিকচক, বৈষ্ণবনগরের পর এবার তৃণমূল-সিপিএমের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পুরাতন মালদহের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তুঁতবাড়ি এলাকা। অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো-সহ বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি উঠেছে শ্লীলতাহানির অভিযোগও। ব্লক তৃণমূল সভাপতির নেতৃত্বে এক সিপিএম নেতার বাড়িতে হামলার সময় সিপিএম নেতার পুত্রবধূ, এক আত্মীয়া-সহ এক প্রতিবেশীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন দু’পক্ষের ১১ জন।

Advertisement

আহতদের মধ্যে ৩ জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। দু’তরফেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতেরা হলেন সিপিএমের প্রদীপ দাস ও মানোয়ার শেখ। প্রদীপের মাথা ফেটেছে। মানোয়ারের হাঁসুয়ার কোপে ডান হাত কেটেছে। মাথায় হাঁসুয়ার কোপে জখম হয়েছেন তৃণমূলের রবি ঘোষ। দু’পক্ষই অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, ভোটের পর দিনই মানিকচকের লস্করপুরে চায়ের দোকানে সিপিএমে হামলায় তৃণমূলের এক নির্বাচনী এজেন্টের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই বৈষ্ণবনগরের চন্দ্রনারায়ণপুরে দুই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি, ভাঙচুর সহ লুঠপাটের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। একদিন বাদে রবিবার বৈষ্ণবনগরের শবদলপুর এলাকায় তৃণমূল-সিপিএমের গোলমালে বোমাবাজি, গুলি-সহ ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। তারপর রাতেই পুরাতন মালদহে সংঘর্ষের পাশাপাশি শাসকদলের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে বাড়িতে শট সার্কিট হয়ে শোওয়ার ঘরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তুঁতবাড়ির আমিনা বিবি। এলাকায় অবৈধ হুকিং চলতে থাকায় শট সার্কিটের ঘটনার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। শাসকদলের প্রশ্রয়ে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তোলে সিপিএম। গত শনিবার সিপিএমের নেতৃত্বে একদল বাসিন্দা এক তৃণমূল কর্মী তার আইসক্রিম কারখানায় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে কারখানার সংযোগ কেটে দেয়। একইভাবে একটি কাঠের কারখানারও সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। অভিযোগ, কেন তাঁদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হল তা নিয়ে রবিবার রাতে সিপিএমের পুরাতন মালদহ লোকাল কমিটির সম্পাদক রবি দাসের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থদের প্রথমে বচসা ও পরে সংঘর্ষ হয়।

সিপিএমের অভিযোগ, ব্লক তৃণমূল সভাপতি বশিষ্ঠ ত্রিবেদী তার দুই ছেলে-সহ জনা ৫০ দলের কর্মীকে নিয়ে রবি দাসের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর শুরু করে, দলের ওই নেতার ভাই, ভাইপোকে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে সিপিএম কর্মীরা ছুটে আসলে তাঁদের উপর হাঁসুয়া নিয়ে চড়াও হয় তৃণমূল কর্মীরা। সেই সময় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ একাধিক মহিলার শাড়ি ধরে টানাটানি করেন বলে অভিযোগ। সিপিএম নেতা তথা পুরাতন মালদহ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ শুকুল বলেন, “অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার প্রতিবাদ করায়, যেভাবে হামলা করা হল তাতে আমরা আতঙ্কিত। যখন তখন ফের হামলা হতে পারে। পুলিশ-প্রশাসনকে সব জানানো হয়েছে।”

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, “দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওরা দুই কর্মীর কারখানার বিদ্যুত সংযোগ ইচ্ছাকৃত কেটেছে তাই নয়, ওই কর্মীদের এলাকা ছাড়া করেছে। সেটাই রাতে রবিবাবুর কাছে জানতে গিয়েছিলাম। তখন ওরাই আমাদের উপর হামলা চালিয়ে এখন শ্লীলতাহানি-সহ নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন