বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই ছাড়ল ট্রেন, জখম যাত্রী

কামরার বেহাল দশা নিয়ে প্ল্যাটফর্মে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন যাত্রীদের একাংশ। বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায়, হুড়মুড়িয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে চোট পেয়েছেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। শুক্রবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছাড়ার সময়ে এমনই ঘটেছে বলে অভিযোগ। চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে এক মহিলা যাত্রী প্ল্যাটফর্মে পড়ে যান। যাত্রীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মে চলা বিক্ষোভ উপেক্ষা করে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৮
Share:

কামরার বেহাল দশা নিয়ে প্ল্যাটফর্মে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন যাত্রীদের একাংশ। বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায়, হুড়মুড়িয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে চোট পেয়েছেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। শুক্রবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছাড়ার সময়ে এমনই ঘটেছে বলে অভিযোগ। চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে এক মহিলা যাত্রী প্ল্যাটফর্মে পড়ে যান। যাত্রীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মে চলা বিক্ষোভ উপেক্ষা করে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কেন বিক্ষোভ উপেক্ষা করে, হঠাত্‌ই ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি তুলেছেন যাত্রীরা। যদিও, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, শুক্রবার কোনও যাত্রী বিক্ষোভের কথা তাদের জানা নেই। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “এই ঘটনার কথা জানি না। যাত্রীদের তরফেও কোনও অভিযোগ করা হয়নি। তবে ট্রেনের পরিষেবা সংক্রান্ত যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।”

Advertisement

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে হলদিবাড়ি পর্যন্ত প্রতিদিন ৬ বার প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতাযাত করে। হলদিবাড়িগামী দিনের প্রথম প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ছাড়ে ৯টা বেজে ২০ মিনিটে। শুক্রবার ট্রেন ছাড়ার আগেই কয়েকটি কামরার অপরিচ্ছন্ন দশা দেখে ক্ষোভ ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যে। যাত্রীদের অভিযোগ, কলে জল ছিল না। সাফ না করায় শৌচাগারের বর্জ্য ছড়িয়ে ছিল কামরার মধ্যে। সিটের নীচেও ময়লা জমে ছিল বলে দাবি। তাঁরা জানান, প্রায় দিনই ট্রেনের বেশ কিছু কামরার এমন অবস্থা থাকে। তিতিবিরক্ত যাত্রীদের একাংশ কামরা থেকে প্ল্যাটফর্মে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পরেও, কোনও আধিকারিক না আসায়, কয়েকজন বিক্ষোভকারী ওভারব্রিজ দিয়ে স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের দিকে এগোতে শুরু করেন। সে সময়েই হঠাত্‌ই ট্রেন ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভ ছেড়ে হুড়মুড়িয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে আহত হন তিন চার জন যাত্রী। এক মহিলা যাত্রী প্ল্যাটফর্মে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। বিক্ষোভ যাতে দানা বাঁধতে না পারে, সে কারণেই হঠাত্‌ করে ট্রেন চালিয়ে দেওয়া হয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

শুক্রবার ট্রেনে যাত্রী ছিলেন নিউ জলপাইগুড়ি নিত্য যাত্রী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক দীপক মোহান্তিও। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “মাঝের দিকের কয়েকটি কামরায় বসার মতো পরিস্থিতি ছিল না। কামরাতে উঠেই দুর্গন্ধে অনেকের গা গুলিয়ে ওঠে। সকলে মিলেই প্ল্যাটফর্মে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকি। তখনই হঠাত্‌ ট্রেন ছেড়ে দেয়।” দীপকবাবুর দাবি ট্রেন ধরার জন্য সকলেই একসঙ্গে দৌড়ে কামরায় উঠতে যায়, তাতেই ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে জখম হন। দীপকবাবুর অভিযোগ, “একজন জানলা ধরে দৌড়তে গিয়ে পড়ে যান। কেউ ওভারব্রিজ থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে জখম হয়েছেন।”

Advertisement

নিউ জলপাইগুড়ির স্টেশন ম্যানেজার অজিতেশ দাসও দাবি করেছেন, এমন কোনও ঘটনার কথা কর্তৃপক্ষ জানেন না। তিনি বলেন, “যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয়।” তবে যাত্রীদের অভিযোগ পৌঁছেছে দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার কাছে। সাংসদ দাবি করেছেন, প্ল্যাটফর্মের বিক্ষোভের কথা রেল কর্তৃপক্ষ না জানলে তা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সাংসদ বলেন, “স্বচ্ছ ভারত মিশনে প্রতিটা ট্রেনে সাফাই হওয়ার কথা। এমন অভিযোগ উঠলে বুঝতে হবে সেই নির্দেশ এখানকার আধিকারিকদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে। বিষয়টি উপযুক্ত মহলে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন