বিধি ভেঙে বক্স বাজিয়ে সভা তৃণমূলের মন্ত্রীদের

মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। সোমবার অঙ্ক পরীক্ষা। তার মধ্যেই বক্স বাজিয়ে একাধিক জায়গায় সভা করল শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা। কোচবিহারের মাথাভাঙায় এমনকী হাসপাতালের মধ্যেই সাউন্ড বক্স বাজিয়ে সভা করেছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। ওই জেলারই ধলপল অঞ্চল কমিটির সম্মেলনে চারটি সাউন্ড বক্স লাগিয়ে সভা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নদিয়ার কল্যাণীতে সদ্য সমাপ্ত কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা ও বনগাঁ লোকসভার উপ নির্বাচনে দলের জয় উদযাপনের জন্য কল্যাণী শিক্ষায়তন স্কুলের মাঠে বক্স বাজিয়ে সভা করে তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:৫৯
Share:

মাথাভাঙার অনুষ্ঠানে মাইকে ভাষণ দিচ্ছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ।

মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। সোমবার অঙ্ক পরীক্ষা। তার মধ্যেই বক্স বাজিয়ে একাধিক জায়গায় সভা করল শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা।

Advertisement

কোচবিহারের মাথাভাঙায় এমনকী হাসপাতালের মধ্যেই সাউন্ড বক্স বাজিয়ে সভা করেছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। ওই জেলারই ধলপল অঞ্চল কমিটির সম্মেলনে চারটি সাউন্ড বক্স লাগিয়ে সভা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

নদিয়ার কল্যাণীতে সদ্য সমাপ্ত কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা ও বনগাঁ লোকসভার উপ নির্বাচনে দলের জয় উদযাপনের জন্য কল্যাণী শিক্ষায়তন স্কুলের মাঠে বক্স বাজিয়ে সভা করে তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের মহা সচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী, নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, রাজ্যের কারিগরী শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। সভাস্থলের চারপাশটা ছিল পুরো ফাঁকা। পরীক্ষা চলাকালীন শাসকদলের এত কীর্তিতে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। পার্থবাবু অবশ্য বলেন, “আমরা আইন না মেনে কিছু করি না। স্টেডিয়ামের ভিতরে বক্স রাখা হয়েছিল, ওই আওয়াজ বাইরে যায়নি। ফলে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হয়নি।” গৌরীশঙ্করবাবু বলেন, “সভার জন্য কল্যাণীর মহকুমা শাসকের অনুমোদনও ছিল।” তবে এ দিন কল্যাণীর মহকুমাশাসক ফোন ধরেননি। জেলাশাসক পি বি সালিমও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, এই বিষয়ে যা বলার মহকুমা শাসকই বলবেন।

Advertisement

ধলপালে তৃণমূল জেলা সভাধিপতি তথা বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

এ দিন মাথাভাঙা হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের উদ্বোধনে বক্স বাজিয়ে সভা করেন বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন। পরে তিনি অবশ্য বলেন, “আমি অসন্তুষ্ট। কর্তৃপক্ষকে যা বলার বলেছি। মাইকের আওয়াজ কম করতেও বলেছিলাম।” রবীন্দ্রনাথবাবুর সভা হয় ছাট রামপুর হাইস্কুলের মাঠে চারটি সাউন্ড বক্স বেঁধে। তিনি দাবি করেন, আইন মেনেই ওই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ওই স্কুল মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র নয়। এ ছাড়া ওই স্কুল থেকে জনবসতি অনেকটা দূরে। চারদিক কাপড় দিয়ে ঘিরে সম্মেলন করা হয়। কারও কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।”

মাথাভাঙার মহকুমাশাসক রঞ্জন চৌধুরী এবং তুফানগঞ্জের মহকুমাশাসক পালদেন শেরপা জানান, এই সময় কোনও অনুষ্ঠানে কোনওরকম মাইক্রোফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় না। অভিযোগ, দু’টি অনুষ্ঠানেরই কোনও অনুমতি ছিল না। মাথাভাঙা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার গোপাল চক্রবর্তীর দাবি, “অনুষ্ঠানে একটি মাত্র সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু বক্তব্যের সময় তা চালু ছিল। নিচুু আওয়াজে বক্সের শব্দ বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাতে কোনও শব্দদূষণ হয় না। কারও অসুবিধেও হয়নি।”

তবে বিরেধীদের বক্তব্য, সরকারি অনুষ্ঠানে সরকারের নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। নেতামন্ত্রীরা একে আইন ভাঙছেন। তার উপরে সাফাই দিচ্ছেন। বিজেপি কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “নেতা-মন্ত্রীরাই যদি এমন করেন, তাহলে তো বিপদ। এর পর তো কেউ কথাই শুনতে চাইবে না।”

ছবি: অরিন্দম সাহা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন