বামেদের হাতে থাকা আলিপুরদুয়ার পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল তৃণমূল। বুধবার সকালে পুরসভার সিপিএম চেয়ারম্যানের হাতে দলের কাউন্সিলরদের সই করা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে তৃণমূল। ১৫ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অনাস্থা বৈঠক ডাকতে হবে। সম্প্রতি দল বদলের পরে ২০ ওয়ার্ড বিশিষ্ট আলিপুরদুয়ার পুরসভায় তৃণমূলের ৯ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। ক্ষমতাসীন বামেদের রয়েছে ৮ কাউন্সিলর এবং কংগ্রেসের ৩ জন। একক সংখ্যার নিরিখে বামেদের থেকে তৃণমূলের ১ জন বেশি কাউন্সিলর রয়েছেন। এ দিন অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরে পুরসভায় কংগ্রেস বামেদের সমর্থন করতে পারে বলে আলোচনা হচ্ছে। তবে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে বার্তা দিয়েছে তৃণমূল নেতারাও।
গত সেপ্টেম্বর মাসে পুরসভা নির্বাচনে বামেরা ৮টি এবং তৃণমূল ও কংগ্রেস উভয় দলই ৬টি করে আসন পায়। অক্টোবর মাসে বোর্ড গঠনের সময়ে কংগ্রেস কাউন্সিলররা না আসায়, বামেরা একক গরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড গঠন করে। সে সময়েও বাম-কংগ্রেস বোঝাপড়া হয়েছিল বলে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়। পরবর্তীতে কংগ্রেসের তিন জন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় দলের কাউন্সিলর সংখ্যা বেড়ে হয় ৯। তৃণমূলের দাবি, পুরসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে তারাই বোর্ড গড়তে চলেছেন। পুর চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান নিজে থেকে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক না ডাকলে তৃণমূল কাউন্সিলররা মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
পুরসভার সিপিএমের চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, “অনাস্থা নিয়ে ভাবছি না। শহরের উন্নয়নের ইতিমধ্যে প্রায় দেড় কোটি টাকার কাজ শুরু করা হচ্ছে। রাস্তা সংস্কার এবং নর্দমা পরিষ্কার করা হবে, তা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছি।” তৃণমূলের জমা দেওয়া অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক ডাকা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করব।” কেন অনাস্থা আনল তৃণমূল? শহর কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আশিস দত্ত বলেন, “বামেরা সংখ্যালঘু বোর্ড চালাচ্ছে। সাত মাসে উন্নয়ন হয়নি।”
অনাস্থা প্রস্তাবে সংখ্যার নিরিখে কোনও সমস্যা হবে না বলে বামেরা দাবি করেছে। আরএসপি-র ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম তালুকদার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী অনাস্থা বৈঠকে উপস্থিত কাউন্সিলর সংখ্যার অর্ধেকের থেকে এক জন বেশি দেখিয়ে জিততে হয়। সে ক্ষেত্রে ২০ কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলে অর্ধেক ১০ এবং যোগ ১, মোট ১১ জন কাউন্সিলরের সমর্থন দেখাতে হবে তৃণমূলকে। ওদের ৯ জন কাউন্সিলর রয়েছে।”
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রদেশ কার্যকরী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির সময়ে ২০ জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলে, আমাদের পক্ষে ১২টি ভোট পড়বে। আমরা আশা করব কংগ্রেস আমাদের সমর্থন করবেন।” পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলকে সমর্থনের প্রশ্ন নেই। বাম বোর্ড সমর্থন চাইলে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারি।”