বাংরুয়ায় শুরু সম্প্রীতির মেলা

কথিত রয়েছে, পীর সাহেবের মহত্ব দেখে তাঁকে করমুক্ত ৫০০ বিঘা জমি দান করেছিলেন সেন বংশের রাজা লক্ষ্মণ সেন। সেখানেই চিল্লাখানা তৈরি করে ভক্তদের ধর্মের কথা শোনাতেন পীরবাবা। তারপর একদিন হঠাৎ করেই তিনি কোথায় যে চলে যান, তাঁর আর সন্ধান মেলেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩৫
Share:

চিল্লাখানা।

কথিত রয়েছে, পীর সাহেবের মহত্ব দেখে তাঁকে করমুক্ত ৫০০ বিঘা জমি দান করেছিলেন সেন বংশের রাজা লক্ষ্মণ সেন। সেখানেই চিল্লাখানা তৈরি করে ভক্তদের ধর্মের কথা শোনাতেন পীরবাবা। তারপর একদিন হঠাৎ করেই তিনি কোথায় যে চলে যান, তাঁর আর সন্ধান মেলেনি।

Advertisement

পরে সেই চিল্লাখানায় শ্রদ্ধা জানিয়ে সিন্নি প্রসাদ দিতেন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। বহু পরে বাসিন্দারা পীর সাহেবের স্মৃতিতে এলাকায় উৎসব পালন করতে উদ্যোগী হন। তারপর থেকে প্রতি বছর অগ্রহায়ণে উরস মেলা ও উৎসব হয়ে আসছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাংরুয়া এলাকায়। শুক্রবার থেকে এ বারও সেই পীরবাবা হজরত শা খিজির রহমতুল্লা আলেইহের স্মৃতি বিজড়িত উরস মেলা ও উৎসব শুরু হল। এ বছর ৬৮ তম বছরে পড়ল ওই উৎসব ও মেলা। মেলা ও উৎসব চলবে দু’দিন ধরে। দুপুর থেকেই চিল্লাখানায় ভক্তদের ঢল নামার পাশাপাশি জমে উঠতে শুরু করেছে মেলা। বাংরুয়ার ওই উরস উৎসব ও মেলা এলাকায় সম্প্রীতির মেলা ও উৎসব হিসেবেও পরিচিত। দুদিন ধরে মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। মালদহ ছাড়াও বিহার ও ঝাড়খন্ড থেকেও দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মেলায় যোগ দেন।

বাংরুয়া এলাকার পাশ দিয়ে এক সময় গঙ্গার শাখা নদী বইত বলে কথিত রয়েছে। সেই হিসেবে পাশের গ্রামের নাম হয় গাঙনদিয়া। ওই নদীপথে একসময় পালতোলা নৌকা যাতায়াত করত। ওই নদীপথে নৌকোয় চেপে রাজা লক্ষ্মণ সেনের আমলে বাংরুয়ায় এসে হাজির হন পীরবাবা। তাঁর মহানুভবতার কথা পৌঁছয় লক্ষ্মণ সেনের কানেও। লক্ষ্মণ সেন তাকে ৫০০ বিঘা জমি দান করেন। তারপর পীরসাহেব সেখানেই চিল্লাখানা গড়ে তোলেন। চিল্লাখানায় বসে ধর্মীয় বাণী শোনাতেন তিনি। কয়েক বছর থাকার পর এক রাতে আচমকাই বাংরুয়া ছেড়ে চলে যান পীরসাহেব। পীরবাবার যাঁরা খিদমত করতেন সেই খাদিম তথা ভক্তদের বংশধররা আজও বাংরুয়া এলাকায় বসবাস করেন। রাজার দান করা জমির কিছু রয়েছে খাদিমদের উত্তরপুরুষদের কাছে। কিছুটা রয়েছে উরস কমিটির কাছে।

Advertisement

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

কমিটি সূত্রেই জানা যায়, অগ্রহায়ণে আমন ধান তোলার পর পীরবাবাকে পায়েস প্রসাদ দিয়ে ঘরে ঘরে নবান্ন হত। তাই আমন ধান ওঠার পর অগ্রহায়ণের ১০ ও ১১ তারিখে উৎসব ও মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উরস মেলা ও উৎসব কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন ও সম্পাদক আব্দুর রহমান একযোগেই বলেন, ‘‘শুরু থেকেই এই মেলা ও উৎসব সম্প্রীতির উৎসব বলেই পরিচিত। এ ছাড়া দুদিন ধরে জলসা ও কাওয়ালি অনুষ্ঠানও করা হয়ে থাকে।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন