সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব বেসরকারি হাতে দিয়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। সম্প্রতি, তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়িতে পুরসভার শহরের ৬টি ওয়ার্ডের জঞ্জাল সাফাই-এর কাজ শুরু করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪, ৫, ৬, ৭, ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহের ভার বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার জঞ্জাল সাফাইয়ের পরিকাঠামো অপ্রতুল বলেই এই উদ্যোগ। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষামূলক ভাবে বেসরকারি হাতে জঞ্জাল সংগ্রহের ভার দেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রতি মাসে বেসরকারি সংস্থাটি পুরসভাকে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করে দেবে বলে জানা গিয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের দাবি, পুরসভার কোনও পরিষেবা ক্ষেত্রকে বেসরকারি হাতে দিতে গেলে মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত করে, রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়। এই প্রক্রিয়াগুলি করা হয়েছে কিনা তার কোনও সদুত্তর পুরবোর্ড দিতে পারেনি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। তবে পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “পুরসভায় শ্রমিকের সমস্যা রয়েছে। সে কারণে বেসরকারি হাতে দেওয়া হয়েছে।”
পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রমোদ মন্ডল বলেন, “বেসরকারি কোনও সংস্থাকে দিয়ে জঞ্জাল সাফাই-র পরিকল্পনাটি বোর্ডের সভায় অনুমোদন হয়েছে বলে আমার জানা নেই। রাজ্য সরকারের কাছ থেকেও অনুমোদন নেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের ওয়ার্ডগুলিকে বাছাই করা হয়েছে। কী খরচ হচ্ছে তাও আমরা জানি না। জলপাইগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর জয়ন্তী পাল বলেন, “শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম এই ব্যবস্থা চালু করা উচিত্ ছিল। এই ওয়ার্ডে সদর হাসপাতাল, দুটি নার্সিংহোম এবং একটি বাজার আছে। তা হয়নি।”
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের প্রতিটি বাড়ির জঞ্জাল ফেলা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশ ওয়ার্ডের বাড়ি থেকে জঞ্জাল নেওয়া হয় না। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। বাসিন্দারা বাড়ির সামনেই জঞ্জাল ফেলেন। এলাকায় কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান হলে আবর্জনা আরও বেড়ে যায়। অনেক সময় পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বার হয়।
তবে বোর্ডের সভায় পাশ করিয়েই বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “বিরোধীদের উপস্থিতিতে বোর্ডের সভায় বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে জঞ্জাল সাফাই-র বিষয়টি পাশ করা হয়েছে। যে কেউ সেটা দেখে নিতে পারেন।” তিনি জানান, শহরের কেন্দ্রস্থলের ৬টি ওয়ার্ডকে বাছাই করা হয়েছে। দল দেখে ওয়ার্ডের নির্বাচন করা হয়নি। আর বর্তমানে জঞ্জাল সাফাই করতে যত টাকা খরচ হয়, বেসরকারি সংস্থাকে দিলে কম টাকা খরচ হবে। দরপত্র করেই কাজ করা হয়েছে।