অনাহারে শ্রমিকদের মৃত্যু এড়াতে বন্ধ চা বাগান খোলার কোনও ব্যবস্থা না করে সরকারি টাকা খরচ করে মেলার আয়োজন আয়োজন করছে রাজ্য সরকার, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের শুরুতে এমনই অভিযোগ তুললেন চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের নেতৃত্ব।
আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উত্সবের সূচনা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবারই বন্ধ চা বাগান খোলার দাবিতে জলপাইগুড়িতে মিছিল করে বিভাগীয় কমিশনারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। এ দিন তাঁদের স্লোগান ছিল, “সরকারি খরচে মেলা আয়োজনের তামাশা বন্ধ করা হোক। অধিগ্রহণ করে চালু করা হোক বন্ধ বাগান।”
খাবার, পানীয় জল, বিদ্যুত্, চিকিত্সার দাবি জানান বান্দাপানি বাগানের রেখা ওঁরাও, সুরেন্দ্র নগরের নীরজ ছেত্রির মতো শ্রমিকরা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এসে দেখে যান অভুক্ত শ্রমিক আর বন্ধ বাগান।
যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক চিত্ত দে বলেন, “জেলায় ছ’টি বাগান বন্ধ। শ্রমিকরা অনাহারে ধুঁকছে। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে উত্সব করছেন মুখ্যমন্ত্রী।” তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি রাজ্য সরকার রেডব্যাঙ্ক গ্রুপের তিনটি বন্ধ বাগান অধিগ্রহণ করলেও তা চালু হয়নি। শ্রমিকরা দিশেহারা। চিত্তবাবু জানান, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, যে সব বাগান কর্তৃপক্ষ চালাতে পারছে না, সেগুলি রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করবে। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার নির্দেশ মানছে না। ঢেকলাপাড়া বাগান ১৪ বছর থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রচুর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বাগান অধিগ্রহণ করে চালু করার কোনও ব্যবস্থা তো নেওয়া হয়ইনি। উল্টে তিনটি বাগান অধিগ্রহণ করে ফেলে রাখা হয়েছে।”
এ দিনের মিছিলে চিত্তবাবু ছাড়াও ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আরএসপির ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতা মনোহর তিরকে, কংগ্রেস চা শ্রমিক নেতা মণি ডারনাল, সিপিএমের চা শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম প্রমুখ। মনোহরবাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির মূলে রয়েছে চা শিল্প। রাজ্য সরকার মেলা করতে ব্যস্ত। কিন্তু এই শিল্পটা বাঁচানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
এ দিন বন্ধ বাগানের মালিকদের গ্রেফতারের দাবি করেন চা শ্রমিকরা। মণি ডারনাল বলেন, “শ্রমিকদের পিএফ, রেশন, গ্র্যাচুইটির টাকা আত্মসাত্ করে বন্ধ বাগানের মালিকরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সরকার তাঁদের ধরতে উদ্যোগী হচ্ছে না।”