বন্ধ না করে সভার ভিডিও তুলল পুলিশ

আদালতের নির্দেশ মেনে কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হচ্ছে না বলে জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ তুলল সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠন। সোমবার মালদহের চাঁচলে সংগঠনের সমাবেশে ওই অভিযোগ তোলেন রাজ্য সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পড়্যা। দ্রুত আদালতের রায় মেনে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মালদহ অচল করে দেওয়া হবে বলেও এ দিন হুমকি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১১
Share:

আদালতের নির্দেশ মেনে কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হচ্ছে না বলে জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ তুলল সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠন। সোমবার মালদহের চাঁচলে সংগঠনের সমাবেশে ওই অভিযোগ তোলেন রাজ্য সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পড়্যা। দ্রুত আদালতের রায় মেনে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মালদহ অচল করে দেওয়া হবে বলেও এ দিন হুমকি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মালদহে এর আগেও সভা করা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারদের ওই সংগঠন। তাই প্রতিটি সভার মতোই এদিনও সভা শুরু হওয়ার আগেই হাজির হয়ে যায় পুলিশ। পরে পুলিশ বাহিনী নিয়ে নিজেই হাজির হন চাঁচলের আইসি তুলসিদাস ভট্টাচার্য। তবে জোর করে সভা বন্ধ না করলেও নেতাদের বক্তব্য-সহ গোটা সভাস্থলের ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনুমতি ছাড়া সভা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও আদালতের বিচারাধীন বিষয় বলে কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ সুপার।

সংগঠনের দাবি, মালদহে ৪৮০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে কর্মচ্যূত করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে একমাত্র এই জেলাতেই দ্বিতীয় তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। এখন সেই তালিকা থেকে নিয়োগ করা হলেও আগের তালিকার কাউকে নেওয়া হচ্ছে না। এর প্রতিবাদে গত মাসের ৭ তারিখে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালত ২০০ জনকে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ নিয়োগ করছে না বলে অভিযোগ তাঁদের।

Advertisement

এ দিন তা নিয়েই পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেজন্য পুলিশ-প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিতভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সভায় যেখানে মাইক্রোফোনের ব্যবহার হবে না, বা কোনও মঞ্চ নেই সেক্ষেত্রে অনুমতি কেন নিতে হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনের নেতারা।

এ দিন সভা শুরু হতেই তাঁদের কাছে অনুমতিপত্র দেখতে চান চাঁচল থানার এসআই শঙ্কর দাস। সংগঠনের অভিযোগ, তাঁরা যে সর্বস্তরে জানিয়ে সভা করছেন তার লিখিত আবেদন দেখানো হলেও পুলিশ মানতে চায়নি। এর পরেই পুলিশের সঙ্গে সংগঠনের কর্তাদের তর্ক বাধে। সংগঠনের সভাপতিকে চড়া গলায় বলতে শোনা যায়, “আমরা মাইক্রোফোন ব্যবহার করছি না। স্টেজ নেই। ঘরোয়াভাবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব। পুলিশ-প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছি।” এরপর সভা শুরু হলেও কেউ বাধা দেননি। পরে আইসি ভিডিও ক্যামেরাম্যান নিয়ে এসে সভার ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখেন।

সভায় রাজ্য সভাপতি সঞ্জয়বাবু বলেন, “সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে ছেলেখেলা করা হচ্ছে। আমাদের পেটে লাথি মারা হয়েছে তাই আন্দোলনে নেমেছি। অথচ পুলিশ তা দমাতে উঠেপড়ে লেগেছে।” সভায় ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটূক্তি করার অভিযোগে ধৃত কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ার বাপি পালের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বলেন, “নেতা-মন্ত্রীরা অন্যায় করলেও তাঁদের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পুলিশের নেই। অথচ কাজ হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বেফাঁস মন্তব্য করায় সিভিক ভলান্টিয়ার বাপি পালকে ধরতে পুলিশ অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার আইনজীবীও মেলে না।” সঞ্জয়বাবুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নামে অশালীন মন্তব্য করে বাপি পাল অন্যায় করেছেন। কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি হল তাও ভেবে দেখা দরকার। এ দিন সংগঠনের তরফে সভায় আসার জন্য বাপি পালকে আবেদন জানানো হয়েছিল। তিনি অবশ্য আসেননি। বাপি পাল বলেন, “মন ও শরীর কোনওটাই ভাল নয়। পরে নিশ্চয়ই যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন