ভোটের প্রচারে ঝাঁপাতে আহ্বান রাহুলের

গত লোকসভা ভোটে যে সব বিধানসভা এলাকায় দল ভাল ভোট পেয়েছে, সেই সমস্ত জায়গায় শক্তি বাড়ানোর ছক কষেছে বিজেপি। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের এক সভায় সে কথা স্পষ্ট করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। সেই সব খানে দলীয় সভায় প্রচারের সূচি তৈরি করে আন্দোলনে ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকেই রাজ্য জুড়ে বিজেপি-র ওই কর্মসূচি ডায়েরি প্রকাশের মাধ্যমে সূচনা হল।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

কুমারগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৬
Share:

কুমারগঞ্জের সভার রাহুল সিংহ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

গত লোকসভা ভোটে যে সব বিধানসভা এলাকায় দল ভাল ভোট পেয়েছে, সেই সমস্ত জায়গায় শক্তি বাড়ানোর ছক কষেছে বিজেপি। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের এক সভায় সে কথা স্পষ্ট করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। সেই সব খানে দলীয় সভায় প্রচারের সূচি তৈরি করে আন্দোলনে ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকেই রাজ্য জুড়ে বিজেপি-র ওই কর্মসূচি ডায়েরি প্রকাশের মাধ্যমে সূচনা হল। আগামী বিধানসভা ভোটে ন্যূনতম ১৫২টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার লক্ষ্যেই ওই কর্মসূচি বলে ঘোষণা করেন তিনি। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বলেন, “আগামী বিধানসভায় বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা কর্মসূচি নিয়েছি।”

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থেকে প্রচার শুরু করার কারণ কী? দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘুরে ফিরে দল ক্ষমতায় ছিল। এবারেও একটি পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের চেয়ে ভোটের অঙ্কে বিজেপি-র প্রার্থী দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন।” জেলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ের লক্ষে কর্মী সমর্থকেরা তৈরি হচ্ছেন বলে গৌতমবাবু দাবি করেন।

কুমারগঞ্জের বরাহার হাসপাতাল মাঠের জনসভার ভিড় দেখে রাহুলবাবুর দাবি, “স্রেফ দলীয় সভায় এত লোকের ভিড় দেখে টের পাচ্ছি তৃণমূলের দিন গোণা শুরু হয়ে গিয়েছে। তা না হলে এদিন ময়নাগুড়ি কলেজে দলের ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীদের নমিনেশন জমা দিতে তৃণমূল বাধা দিচ্ছে কেন?” তাঁর অভিযোগ, কলেজে কলেজে নির্বাচনের নামে প্রহসন শুরু হয়েছে। রাহুলবাবুর দাবি, “রাজ্যে ৭৫ হাজার বিজেপি-র সদস্য থেকে বর্তমানে ১১ লক্ষ সদস্য হয়ে গিয়েছে। আমরা রাজ্যে এক কোটি সদস্য তৈরির লক্ষ্যে এগোচ্ছি।”

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি এ দিন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ওই শিল্প সম্মেলন থেকে রাজ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির কথা বলছেন। তার মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজ্যের রাস্তাঘাট ও পরিকাঠামো উন্নয়নের টাকা। তাহলে কি নীতীন গডকড়ী, অরুন জেটলিদের ওই শিল্প সম্মেলনের ব্যবসায়ীদের নামের তালিকায় ঢুকিয়েছেন? তা না হলে বাকি ২ লক্ষ কোটি টাকা কে বিনিয়োগ করবে?” তাঁর অভিযোগ, “সবই ভাঁওতা। কত কোটি টাকার বিনিয়োগ এল কোনও স্পষ্ট ছবি নেই।”

রাহুলবাবুর কথার তীব্র বিরোধিতা করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র। তিনি বলেন, “যে ব্লকে তিনি সভা করলেন সেখানে কলেজ তৈরি হচ্ছে, আইটিআই, কিসানমান্ডি তৈরির কাজ চলছে। যে বরাহার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে তিনি সভা করলেন, সেই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গ্রামীণ হাসপাতাল হয়েছে, বালুরঘাট থেকে কুমারগঞ্জের সভার পথে যেতে তাঁর চোখে পড়লো না চকচকে পাকা রাস্তা? ফি বছর বন্যায় ডোবা কুমারগঞ্জ বাসিন্দাদের সুরক্ষায় আত্রেয়ীতে নদী বাঁধ নির্মাণও তিনি দেখেননি নাকি? যেখানে আমাদের ব্যর্থতা, তা নিয়ে তিনি বলুন। কিন্ত জাতীয় দলের প্রদেশ নেতা হয়ে তিনি যে মিথ্যাচার করে গেলেন, তা মানুষই বিচার করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন