কোচবিহার জেলা জুড়েই বাড়ছে লাইন্সেসহীন যন্ত্রচালিত ভুটভুটির দাপট। কিন্তু নির্বিকার প্রশাসন। এমনটাই অভিযোগ দিনহাটার বেসরকারি বাসমালিক ও শ্রমিকদের। এরই প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিলেন তাঁরা। সোমবার কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেয় দিনহাটা বেসরকারি যাত্রী পরিবহণ শ্রমিক ও মালিক সমন্বয় কমিটি। আগামী দশ দিনের মধ্যে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে, ২৯ অগস্ট থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট শুরু হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
সমস্ত বাস, মিনি বাস, ট্যাক্সি, অটো, যেখানে সরকারি ছাড়পত্র নিয়ে রাস্তায় নামছে সেখানে যন্ত্রচালিত ভুটভুটিগুলি কী ভাবে ছাড়া পাচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সমন্বয় কমিটির অভিযোগ, শুধু দিনহাটায় নয় কোচবিহার জেলা জুড়েই অনুমতিহীন যন্ত্রচালিত ভুটভুটির দাপটে শহরতলি থেকে ভ্যান, রিকশা-সহ এই সমস্ত যানবাহন এক রকম উঠে যাওয়ার জোগাড়। এই প্রসঙ্গে কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন জানান, বেআইনি ভুটভুটির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দু’লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। ওই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন দিনহাটার মহকুমাশাসক কাজল সাহা।
দিনহাটা বেসরকারি যাত্রী পরিবহণ ও মালিক সমন্বয় কমিটির সম্পাদক নৃপেন দেবনাথ জানান, দুই বছর আগে থেকেই দিনহাটায় ভুটভুটি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। সে সময় ভুটভুটি চালকদের সঙ্গে বেসরকারি বাস মালিকদের বচসা মেটাতে দিনহাটা থানায় আলোচনায় বসে পুলিশ। তখন আশ্বাস দেওয়া হয়, ভুটভুটি শুধুমাত্র জিনিসপত্র আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু মাস তিনেকের মধ্যেই ফের যাত্রী তোলা শুরু করেন ভুটভুটি মালিকরা। তুলনামূলক অনেক কম ভাড়ায় ভুটভুটিতে যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছেন যাত্রীরা। তাই রোজই বেসরকারি বাস, মিনিবাসে যাত্রী সংখ্যা কমছে। তাঁর আরও বক্তব্য, রাস্তায় চলা এই সব ভুটভুটির কোনও ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলি তৈরি হচ্ছে। ফলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কিন্তু সারা বাংলা মোটর ভ্যান চালক সংগঠনের কোচবিহার জেলা সভাপতি অনিল চন্দ্র রায় বর্মনের দাবি, তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে লাইন্সেস চেয়ে আন্দোলন করছেন। লাইন্সেস দেওয়ার সরকারি নির্দেশ জারি হলেও তা মেলেনি এখনও। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুধুমাত্র দিনহাটাতেই অবৈধ ভাবে প্রায় দুশো’টি ভুটভুটি চলাচল করে। গোটা কোচবিহার জেলায় ওই সংখ্যা হাজারেরও বেশি। এক ভুটভুটি চালক এ দিন জানিয়েছেন, কেরোসিন তেলেই বাইকের ইঞ্জিন লাগানো ভুটভুটি চালান তাঁরা। সে ক্ষেত্রে খরচ অনেক কম পড়ে। পাশাপাশি একটি ভুটভুটিতে ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী তুলতে পারেন যেটা ভ্যান বা রিকশাতে কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।