মানিকচকে ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত ধৃত

মালদহের মানিকচকের বসন্তটোলা গ্রামে এক ‘ধর্ষিতা’ মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এক নাবালক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে মালদহ পুলিশের একটি দল বিহার পুলিশের সাহায্যে পূর্ণিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানান, ঘটনার পরই ওই কিশোর মালদহ থেকে বিহারের পূর্ণিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১১
Share:

মালদহের মানিকচকের বসন্তটোলা গ্রামে এক ‘ধর্ষিতা’ মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এক নাবালক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে মালদহ পুলিশের একটি দল বিহার পুলিশের সাহায্যে পূর্ণিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানান, ঘটনার পরই ওই কিশোর মালদহ থেকে বিহারের পূর্ণিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জেলা পুলিশের দল সেখানে গিয়ে মূল অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। এই নিয়ে ওই ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

অভিযোগ, গত সপ্তাহের সোমবার রাতে মানিকচকের বসন্তটোলা গ্রামে প্রতিবেশী এক কিশোর বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছিল। ওই গৃহবধূর চিৎকারে গ্রামবাসীরা ছুটে এসে ওই কিশোরকে ধরে ফেলেন। ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে গ্রামের মাতব্বরা বাধা দেন বলে। পরের দিন মঙ্গলবার গ্রামের মাতব্বররা সালিশি সভা ডাকেন। সালিশি সভায় গ্রামের মাতব্বররা অভিযুক্ত কিশোরকে ২০ বার কান ধরে ওঠবোস করিয়ে ওই মহিলার পা ধরে ক্ষমা চাইয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। মাতব্বরদের এই বিধান মানতে চাননি ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী। তাঁরা থানায় নালিশ জানাতে অনড় থাকলে গ্রামের মাতব্বররা ওই মহিলাকে সালিশি সভায় ‘কুলটা’ বলে মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগ। এরপরই বুধবার সকালে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে ওই মহিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। পরের দিন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যখন ওই মহিলা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, তখন পুলিশ তাঁর জবানবন্দি নেয়। গত শুক্রবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র জনস্বার্থে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মালদহের জেলা ও দায়রা জজ, জেলাশাসক ও জেলাপুলিশ সুপারকে ঘটনার রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Advertisement

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করার পরই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। হাইকোর্ট ওই ঘটনা নিয়ে নিজে মামলা দায়ের করেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার তড়িঘড়ি মানিকচকের ভূতনির বসন্তটোলা গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব। পুলিশ মূল অভিযুক্ত, তার মা ও কাকাকে গ্রেফতার করলেও সালিশি সভার মাতব্বরদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।

আদালত সূত্রের খবর, গত শুক্রবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ওই দিন ওই ঘটনার উল্লেখ করেছিলেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে গত শুক্রবার দুপুরেই মালদহের ভারপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ বিভাস পট্টনায়ক বসন্তটোলা গ্রামে যান। তিনি ওই মহিলার পরিবার ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই মহিলার পরিবারকে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বলেছিলেন, “কোনও অসুবিধা হলে আমাকে ফোন করবেন। আমরা আপনার পাশে থাকব।” ঘটনাস্থল ঘুরে এসে পরের দিনই জেলা ও দায়রা জজ প্রধান বিচারপতিকে ঘটনার রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি ওই দিনই জেলাশাসক ও জেলাপুলিশ সুপার পৃথক পৃথক ভাবে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement