মোবাইলে অশালীন ছবি, ধৃত শিক্ষাবন্ধু

জেলাশাসককে মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে অশালীন ছবি পাঠানোর অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের এক তৃণমূল নেতার দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মহম্মদ আব্দুল খালেক। ইসলামপুর থানার সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেড়ঝাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষাবন্ধুর কাজ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:৫১
Share:

জেলাশাসককে মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে অশালীন ছবি পাঠানোর অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের এক তৃণমূল নেতার দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মহম্মদ আব্দুল খালেক। ইসলামপুর থানার সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেড়ঝাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষাবন্ধুর কাজ করেন। পুলিশ ধৃতের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের জামিন অযোগ্য ৬৬ (এ), ৬৭, ৬৭ (এ) ধারা সহ কোনও মহিলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অপমান করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ৩টে নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপে ওই ছবি পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, লালুপ্রসাদ যাদব সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় স্তরের নেতা সহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি বিকৃত করা হয়েছে। ছবিগুলি অশালীন। সরকারি আইনজীবী দীপ্তেশ ঘোষের দাবি, “ধৃতের মোবাইল খতিয়ে দেখে প্রাথমিকভাবে সে জেলাশাসককে অশালীন ছবি পাঠিয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।” এ দিন আদালতে চার জন আইনজীবী অভিযুক্তের হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে স্বরূপ বিশ্বাস নামে এক আইনজীবীর দাবি, আব্দুল খালেকের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া মোবাইল নিয়ে খেলার সময়ে ভুল করে জেলাশাসককে একটি ছবি পাঠিয়ে দিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা জানিয়েছেন, অভিযুক্তের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে কলকাতার ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে। জেলাশাসকের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, “কেউ বেআইনি কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা তো নেওয়া হবেই।”

জেলাশাসক ছবিগুলি পাওয়ার পরের দিন তাঁর আপ্ত সহায়ক কাকলি রায় অভিযুক্তের মোবাইল নম্বর সহ রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার বিকেলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আব্দুল খালেকের অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে প্রথমে বলেছিল তাঁর একটি গাড়ির দুর্ঘটনা হয়েছে, সে ব্যাপারে কথা বলতে থানায় আসতে হবে। কিন্তু আব্দুলের দাবি, তাঁর কোনও গাড়ি নেই। তিনি প্রথমে এক দফায় থানা থেকে ঘুরেও আসেন। তারপরে বিকেলে ফের তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

আব্দুলের দাবি, তিনি সিপিএম সমর্থক ও সিটু প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্য। তাঁর দাবি, “হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভুল করে মোবাইল থেকে একটি অশালীন ছবি জেলাশাসকের মোবাইলে চলে গিয়েছে।” সিটুর জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সুবীর বিশ্বাসের দাবি, “অভিযুক্ত যে দলেরই সমর্থক হোক না কেনও শাস্তি হওয়া উচিত।” সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রবীরকুমার পাত্রও জানান, পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে তাঁরা বিভাগীয় তদন্ত করবেন।

অভিযুক্তের ভাই মহম্মদ কামালুদ্দিন ইসলামপুরের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। পুলিশ সূত্রের খবর, ভাইকে গ্রেফতারের পর ইসলামপুর থানায় এসে ক্ষোভ প্রকাশও করেন কামালুদ্দিন। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম পালের দাবি, “মহম্মদ কামালুদ্দিন কোনও পদে নেই। তবে তিনি দলের ইসলামপুর এলাকার অন্যতম নেতা। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন