পিকনিক স্পটে অভিযান পুলিশ ও বনকর্মীদের।
খালি মদের বোতল হাজার দুয়েক, থার্মোকলের পাতা আর প্লাস্টিকের গ্লাসও পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। এর বাইরেও চিপসের প্যাকেট, জল এবং কোল্ডড্রিঙ্কের বোতল ও সিগারেটের প্যাকেট ছ’হাজার। এ সবই উদ্ধার হল গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া মূর্তি নদীর চর থেকে। রবিবার পিকনিকের মরসুমে বন দফতর এবং পুলিশের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলে। এক দিকে যেমন পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় বনকর্মী এবং পুলিশকর্মীরা থালা, গ্লাস, বোতল কুড়োতে হাত লাগান তেমনই মাইকে সচেতনতায় প্রচারও চালানো হয়।
ডুয়ার্সের অন্যতম বিখ্যাত এই মূর্তির ট্যুরিষ্ট স্পটে ছুটির দিনগুলিতে গড়ে ১০০টিরও বেশি পিকনিকের দল আসে। এবছর সংখ্যাটা বেড়েছে। ডিজে বক্সের বিকট আওয়াজ সেই সঙ্গে মদের বোতল থেকে থালা গ্লাস ফেলে ব্যাপক দূষণ শুরু হওয়ায় উদ্বেগ ছড়ায় বন দফতরে। সন্ধ্যার পরই মূর্তি নদীতে জল খেতে হরিণ, বাইসন হাতির দল ঢুকে পড়ে। লবণাক্ত ভাব থাকায় চিপস প্যাকেট, প্লাস্টিক খেলে বন্যপ্রাণের বিপত্তি ঘটবে। এর পরেই গত সপ্তাহে বন এবং পুলিশের জেলা পর্যায়ের বৈঠকে মূর্তিতে ট্যুরিষ্ট পুলিশের সঙ্গে বন কর্মীদের সচেতনতা অভিযান চূড়ান্ত হয়ে যায়। মালবাজারের এসডিপিও নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘আমরা চাই সকলেই পিকনিক করুন। কিন্তু তা যেন জঙ্গলের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই হয়।’’ এ দিন মাইক হাতে নিয়ে হেঁটে এসডিপিও-কেও প্রচার করতে
দেখা যায়।
বুনো জন্তুদের কথা মাথায় রেখে মূর্তির চরে যেন প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলে না রাখা হয় তার কথাই বলেন তারা। গরুমারা বন্যপ্রাণ এলাকার ডিএফও উমা রানি এ দিন জানান, পিকনিকে বুনো জন্তুদের অসুবিধা যে হচ্ছেই তা তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। তার কথায়, ‘‘আমরা অনুরোধ করছি প্রতিটি পিকনিক করতে আসা দলগুলি যাতে নিজেরাই ডাস্টবিন নিয়ে আসেন। বর্জ্য নদীর চরে না ফেলে ফেরত নিয়ে গেলেই সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে।’’
এ দিন বনদফতরের তরফ থেকে মাইক বাজাতে নিষেধও করা হয়। তবে এই অভিযান নিয়মিত না হলে সাফল্য মিলবে না— এমনই মত পিকনিক করতে আসা দলগুলির। এ দিন ডুয়ার্সের চালসা চা বাগানের কর্মীরা পিকনিক করতে এসেছিলেন সেই দলেরই সদানন্দ দাস, শংকর বিশ্বকর্মা। তাঁদের কথায়, ‘‘সচেতনতা অভিযান চালানো ভাল উদ্যোগ, কিন্তু নিয়মিত না চললে লাভ হবে না।’’