মেয়ের সামনে স্ত্রীকে খুন

মা-র মৃত্যু দেখে স্তব্ধবাক কিশোরী পম্পা

চোখের সামনে মাকে ছটফট করতে দেখার দৃশ্য ভুলতে পারছে না দুই বোনই। মাঝে মধ্যেই কেঁদে ফেলছে। বিবরণ দিতে গিয়ে বারেবারেই আঁতকে উঠছে। চোখের জল মুছছে দুজনেই। পূর্ণিমা ও পম্পা মাহাতো। বছর পনেরোর পূর্ণিমা বিষয়টি সামলে নেওয়া চেষ্টা করলেও বছর সাতেকের পম্পা এখনও আতঙ্কিত। জলভরা চোখে বলছে, “মার দুটো হাত ধরে ছিল বাবা, জেঠু ও দাদারা। মা কাঁদছিল আমাকে ছেড়ে দাও।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৪
Share:

চোখের সামনে মাকে ছটফট করতে দেখার দৃশ্য ভুলতে পারছে না দুই বোনই। মাঝে মধ্যেই কেঁদে ফেলছে। বিবরণ দিতে গিয়ে বারেবারেই আঁতকে উঠছে। চোখের জল মুছছে দুজনেই। পূর্ণিমা ও পম্পা মাহাতো।

Advertisement

বছর পনেরোর পূর্ণিমা বিষয়টি সামলে নেওয়া চেষ্টা করলেও বছর সাতেকের পম্পা এখনও আতঙ্কিত। জলভরা চোখে বলছে, “মার দুটো হাত ধরে ছিল বাবা, জেঠু ও দাদারা। মা কাঁদছিল আমাকে ছেড়ে দাও। তার পর মায়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।” ছোট্ট মেয়েটি গিয়ে দিদিকে ডেকে এনেছিল। পূর্ণিমা গিয়ে মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাকে মারধর করা হয়। তবুও পূর্ণিমা মায়ের গায়ে জল ঢেলে চেঁচিয়ে লোকজন ডেকে আনে। দুই বোন হাসপাতালে যায়। সেখানে মায়ের মৃত্যুর পরে ছোট্ট পম্পার কথা হারিয়ে গিয়েছে।

মালদহের হবিবপুর ব্লকের ধুমপুর গ্রামপঞ্চাতের পলাশবোনা গ্রাম। গত সোমবার পম্পার, পূর্ণিমার মা রেণুকাকে তাঁর স্বামী সতীশ ও তার ভাসুর প্রতিলাল ও সুদন এবং তাদের ছেলেরা সকাল বেলা কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। সেই সময় বাড়িতে কাজ করছিল বড়ো মেয়ে পূর্ণিমা। আর বাড়িতে ছিল পম্পা। মেজ মেয়ে পূজা গ্রামেই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল।

Advertisement

মাকে খুনের দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হলেও দুই বোন কিন্তু চুপ করে থাকেনি। ছোট মেয়ে দেরি না করে তার দিদিকে ডেকে নিয়ে আসে। তখন পূর্ণিমা তার মাকে বাঁচানোর জন্য বিছানার চাদর নিয়ে গায়ে জড়ানোর চেষ্টা করে। সেই সময় তার হাতে ছেঁকা লেগে পুড়ে যায়। পরে জল ঢেলে আগুন নেভায় দুজনে।

এখন তিন বোনই দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারির দৌলতপুরে দাদুর বাড়িতে রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রেণুকা তাঁর বাবার এক মাত্র মেয়ে। এদিন তার মৃতদেহ বংশীহারিতে নিয়ে গিয়ে দাহ করা হয়। পরিবারের লোকেরাও শোকে ভেঙে পড়েছেন। পূর্ণিমা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি করে। সে বলে, “আমার মাকে যারা মেরেছে তাদের শাস্তি দিতেই হবে।” এই বিষয়ে ধুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান সোনাই সোরেন বলেন, “আমি ট্রেনিংএর জন্য মালদহে আছি। ঠিক কি ঘটেছিল তা জানা নেই। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সম্পাদক হাসান আলি শাহ বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখব কী করা যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন