মারোয়াড়ি ঘনিষ্ঠতা নিয়ে এবার তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী গৌতম দেবকে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, ওই সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে তৃণমূল এক সময় কটাক্ষ করত। কুৎসা রটাত। এমনকী তাঁকে ‘অশোক অগ্রবাল’ বলেও তৃণমূলের নেতারা অপপ্রচার করতেন। এখন ভোটের দায় মাথায় নিয়ে তৃণমূল তাঁদেরই ঘনিষ্ঠ হতে চাইছে বলে অসোকবাবুর অভিযোগ। ভোট পেতে বিশেষ ওই সম্প্রদারে ব্যবসায়ীদের ডেকে অন্য ব্যবসায়ীদের থেকে আলাদা করে ‘গুরুত্ব দেন’ বলে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা বোঝাতে চাইছেন। অশোকবাবুর দাবি, “ভোট মিটলেই ব্যবসায়ীরা প্রকৃত সত্য বুঝতে পারবেন।” যদিও অশোকবাবুর এ সব কথা গুরুত্ব দিতে নারাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মারোয়াড়ি বা কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের ডেকে নয়, তাঁরা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির ডাকে তাদের সভাতে গিয়েছিলেন বলে জানান।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “অশোকবাবুর কথায় জবাব দিতে চাই না। আমরা তাঁকে অশোক অগ্রবাল বলতাম না। কিছু ব্যবসায়ীকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিতেন। তাঁর কর্ম পদ্ধতির জন্য শিলিগুড়ির মানুষ অনেকেই তাঁর ওই নাম দিয়েছিলেন। কান পাতলেই তা শোনা যেত। কোনও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেলামেশার জন্য তাঁরা তা বলতেন বলে মনে করি না। অশোকবাবুর জানা উচিত, তৃণমূল জাতি, ধর্ম, বর্ণ ভেদ দেখে না। সকলকে নিয়েই চলে।”
কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি-সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের ডাকে সভাতে তাঁরা গিয়েছিলেন বলে জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। সেখানে মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীরাই শুধু নন অন্যান্যরাও ছিলেন দাবি করে কোনও বিশেষ ব্যবসায়ীদের সভা বলে মানতে চাননি তিনি। সভায় কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ঘরিষ্ঠতা থাকলে তা নিয়ে অশোকবাবু যা বলতে চাইছেন তা ভিত্তিহীন বলে জানান। মন্ত্রীর কথায়, এই নয়, মারওয়াড়ি ছাড়া অন্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছিলেন না। বা অন্যদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
অশোকবাবু বলেন, “আমি যখন পুরমন্ত্রী ছিলাম তখন তৃণমূলের গৌতম দেবরা আমাকে অশোক অগ্রবাল বলে কটাক্ষের চেষ্টা করতেন। বাস্তবে আমি সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একই ভাবে মিশতাম। পাশে থাকতাম। সম্মান, মর্যাদা দিতাম। আজও তাই করি। আর তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী এখন যা করছে তা ভোটের প্রয়োজনে মাত্র। ভোট মিটে গেলে তাঁরা ব্যবসায়ীদের দিকে ফিরেও দেখবেন না। সেটা অনেকেই বুঝতে পারছেন।” তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, “আমাদের দল হয়েছে ১৯৯৮ সালে। অশোকবাবু মন্ত্রী ১৯৯১ থেকে। তখন অশোকবাবুকে কেউ কোনও নামে ডাকলে সেটা তৃণমূল নয়। তা ছাড়া দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে। তিনি বুদ্ধ জয়ন্তী, ঈদ, করম পুজা সব ক্ষত্রে নির্বিশেষে ছুটি ঘোষণা করেন।”