ছ’দিন পরে নিখোঁজ তবলাবাদকের দেহ উদ্ধার হল জলাশয় থেকে। শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ি পুকুরে রূপকদেব রায়কত (৫৩) নামে ওই ব্যক্তির দেহ মেলে। রায়কতপাড়ার রূপকবাবু নামী তবলা শিল্পী ছিলেন। তাঁর দেহ উদ্ধারের খবর ছড়াতেই শিল্পী মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। গত ২৬ জানুয়ারি রাত থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
রূপকবাবুর মামা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার জানান, বেশ কিছুদিন থেকে জটিল রোগে ভুগছিলেন শিল্পী। শরীরে উদ্বেগজনক ভাবে সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম কমে যাওয়ায় তাঁর স্মৃতিভ্রংশ ঘটে। ২০ জানুয়ারি সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাকে রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা কাটেনি। নির্মলবাবু বলেন, “সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ঘটতির জন্য রূপক ধীরেধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল। ওঁকে কলকাতায় নিয়ে চিকিত্সা করানোর প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু ২৬ জানুয়ারি রাতে আচমকা নাইট গাউন পরে বেরিয়ে যায়। ওর একটি মোবাইল ফোন ছিল। সেটাও ইদানিং ব্যবহার করত না।”
বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় যান শিল্পী? নির্মলবাবু জানান, ওঁর মানসিক সমস্যার কথা ভেবে নিখোঁজ হওয়ার পরে আত্মীয়দের বাড়ির পাশাপাশি রেল স্টেশন, বাজার, জাতীয় সড়কে খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু কোথাও দেখা মেলেনি। তিনি বলেন, “দেহ উদ্ধারের পরে এখন মনে হচ্ছে, রূপক রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পথ ভুল করে পাড়ার পাশে রাজবাড়ির পুকুরপাড়ে চলে যায়। কোনও ভাবে গভীর জলে পড়ে যায়। শরীর দুর্বল থাকায় আর উঠতে পারেনি।”
শিল্পীর খোঁজে নেমেছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের অন্যতম কর্তা স্বরূপ মণ্ডল। এ দিন পুলিশের সহযোগিতায় জল থেকে দেহ উদ্ধার করে তাঁর দল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও তাঁর মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে তাঁদের প্রাথমিক সন্দেহ, দিগ্ভ্রান্ত হয়ে পুকুরে পড়ে গিয়ে হয়তো মারা গিয়েছেন তিনি। কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “মেরে জলে ফেলে দেওয়ার মতো কোনও উপসর্গ পাওয়া যায়নি। তবু বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।