শিক্ষাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে

বহিরাগতদের কলেজ থেকে বেড়িয়ে যেতে বলায় রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বামপন্থী শিক্ষাকর্মীদের একাংশের উপর টিএমসিপি সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আবার টিএমসিপি সমর্থকদের উপর পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে দুপক্ষের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজ চত্বরে। টিএমসিপি সমর্থকরা কলেজের দোতলায় অধ্যক্ষ ও অফিস রুমের বারান্দার সামনে রাখা একাধিক ফুলের টব ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪২
Share:

ঘটনার পরে কলেজ চত্বরে পড়ে রয়েছে ভাঙা টব। নিজস্ব চিত্র।

বহিরাগতদের কলেজ থেকে বেড়িয়ে যেতে বলায় রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বামপন্থী শিক্ষাকর্মীদের একাংশের উপর টিএমসিপি সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আবার টিএমসিপি সমর্থকদের উপর পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে দুপক্ষের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজ চত্বরে। টিএমসিপি সমর্থকরা কলেজের দোতলায় অধ্যক্ষ ও অফিস রুমের বারান্দার সামনে রাখা একাধিক ফুলের টব ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

যদিও টিএমসিপির দাবি, বামপন্থী শিক্ষাকর্মীরাই ফুলের টবগুলি ভাঙচুর করেছেন। গোলমালের সময় টবের আঘাতে শিক্ষাকর্মী ও টিএমসিপি সমর্থক মিলিয়ে মোট চারজন জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ঘটনার পর কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ ও নিরাপত্তার দাবিতে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে কর্মবিরতি করেন শিক্ষাকর্মীরা। ব্যবস্থা না নিলে অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি চালানোর হুমকি দেন তাঁরা। শিক্ষাকর্মীদের চাপে কলেজ কর্তৃপক্ষ এদিন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হন বলে অভিযোগ। এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষাকর্মীদের চিহ্নিত করে তাঁদের শাস্তির দাবিতে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে টিএমসিপি। অধ্যক্ষ দুপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

গত ২৮ জানুয়ারি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। ৪২টি আসনের মধ্যে ২৩টি আসনে জয়ী হয়ে ছাত্র সংসদ পুনর্দখল করে এসএফআই। ১৯টি আসন পায় টিএমসিপি। আজ, মঙ্গলবার ছাত্র সংসদ গঠন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু গোলমালের জেরে কলেজে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় তা আদৌ সম্ভব হবে কী না তা নিয়ে সংশয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায় বলেন, “শিক্ষাকর্মী ও টিএমসিপির অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করা ও সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, কলেজের পরিবেশ ঠিকঠাক নেই। সেইকারণে, সংসদের বোর্ড গঠন করা যাবে কি না তা দেখা হচ্ছে।

Advertisement

কলেজ সূত্রের খবর, কলেজের ৩০ জন শিক্ষাকর্মীই সিপিএম প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়নের সদস্য। সংগঠনের কলেজ ইউনিটের সম্পাদক কার্তিক দাস বলেন, “এদিন ক্লাস চলাকালীন টিএমসিপি সমর্থকেরা বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে কলেজ চত্বরে হইচই করে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাদের বারণ করাতেই ফুলের টব ছুড়তে থাকে তারা। দুই শিক্ষাকর্মী জখম হন।”

অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপি’র শহর কমিটির কার্যকরী সভাপতি বিবেক গুপ্ত বলেন, “কলেজে ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে কি না, তা নির্বাচিত টিএমসিপি সদস্যরা দেখছিলেন। তখন ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমরা এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে কেন প্রার্থী দিয়েছি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বামপন্থী শিক্ষাকর্মীরা। প্রতিবাদ করায় টব ছোড়া হয়। দু’জন জখম হন।” কলেজের বিদায়ী ছাত্র সংসদের সহকারি সম্পাদক সায়শ্রী ভৌমিক বলেন, “টিএমসিপি ষড়যন্ত্র করে আজ ছাত্র সংসদের বোর্ড গঠন ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন