শিল্প-সমস্যার দ্রুত সমাধানে দু’দিনের ক্লিনিক

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগীদের নিয়ে গঠিত দুটি শিল্প তালুকের অন্তত ২০০ জন ব্যবসায়ী নানা সমস্যায় ভুগছেন। কেউ বছরের পর চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ মাসুলে প্রাপ্য ছাড়ের টাকা পাচ্ছেন না। কেউ কারখানার পরিধি বাড়াতে জমি পেতে হয়রান হচ্ছেন।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০২:১১
Share:

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগীদের নিয়ে গঠিত দুটি শিল্প তালুকের অন্তত ২০০ জন ব্যবসায়ী নানা সমস্যায় ভুগছেন। কেউ বছরের পর চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ মাসুলে প্রাপ্য ছাড়ের টাকা পাচ্ছেন না। কেউ কারখানার পরিধি বাড়াতে জমি পেতে হয়রান হচ্ছেন। কারও দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র নবীকরণে হয়রানি হচ্ছে। কর-রাজস্ব নিয়ে জটিলতায় কারও ভোগান্তি চলছেই। প্রয়োজনীয় লাইসেন্স পেতে দোরে দোরে ঘুরে ক্নান্ত অনেকে। দুই শহরের উদ্যোগীদের সমস্যার চটজলদি দাওয়াই দিতে দু’দিনের ‘ক্লিনিক’ চালু করছে রাজ্য শিল্প দফতরের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোগ বিভাগ। তাতে সামিল কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই)-এর উত্তরবঙ্গ শাখা। আগামী ৩ জুন ওই ক্লিনিক চালু হবে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে সেভিং কিংডম-এ।

Advertisement

সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ শাখার ভাইস চেয়ারম্যান নরেশ অগ্রবাল বলেন, “একটা অভিনব ব্যাপার হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের সমস্ত বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। দুদিনের ক্লিনিকে যাবতীয় সমস্যার কথা শোনার পরে শিলিগুড়িতেই বোর্ড মিটিং করবে নিগম। যাতে বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হয়ে যায় সেই মতো সিদ্ধান্ত নেবে নিগম।” ভাইস চেয়ারম্যান জানান, ওই ক্লিনিক সফল করাতে শিল্প দফতরের মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও, বস্ত্র বিভাগের প্রধান সচিব রাজীব সিংহ প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। তিনি নিজেও টানা ৩ দিন শিলিগুড়িতে থাকবেন।

যে সমস্যা বাম আমলে দেড় দশক চেষ্টা করেও মেটেনি তা রাতারাতি মিটবে এমন আশা করার কারণ কি?

Advertisement

সিআইআই সূত্রের খবর, গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি সিআইআই শিলিগুড়িতে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যা মেটাতে ‘সিনার্জি’-২০১৪-এর আয়োজন করেছিল। সেখানে শিলিগুড়ির সেবক রোডের ও জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ির শিল্প তালুকের অন্তত ২০০ জন উদ্যোগী যোগ দেন। প্রাথমিক আলোচনায় সেখানে ২০০টি সমস্যা তালিকা ভুক্ত হয়। সে যাত্রায় তিন দিনের আলোচনার সময়ে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, বিদ্যুৎ দফতর সহ অনেক সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ছিলেন।

সেখানে আলোচনার পরে একাধিক সমস্যার সমাধানও হয়ে যায়। যেমন, দুটি শিল্প তালুকের উদ্যোগীদের বিদ্যুৎ মাসুলের ছাড় বাবদ বকেয়া প্রায় সওয়া ২ কোটি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। কয়েকজনের জমি, দূষ সংক্রান্ত জটও ছাড়ানো হয়। তবে সেখানে কিছু সমস্যাও তৈরি হয়। সিআিআই-এর এক সদস্য জানান, শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যা মেটাতে সব দফতরের প্রতিনিধিদের হাজির থেকে একমত হওয়া দরকার। সেই সুযোগ সিনার্জিতে পুরোপুরি ছিল না বলে সিনার্জিতে অনেক সমস্যা মেটেনি। সে জন্য এ বার ‘ক্লিনিক’-এ নিগমের সব বোর্ড সদস্যদেরই হাজির করিয়ে এক জায়গায় সব বিভাগের কর্তারা বসে জট কাটানোর চেষ্টা করবেন। সিআইআইয়ের এক তরুণ সদস্য তথা শিল্পোদ্যোগী সঞ্জিত সাহার কথায়, “সিনার্জিতে সাফল্য মেলার পরে ক্লিনিক গড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়। মূলত মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প বিভাগের প্রধান সচিবের উদ্যোগে ক্লিনিকের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। আশা করি, বাদবাকি সমস্যা এবার অনেকটাই মিটবে।”

সিআইআই সূত্রের দাবি, যে হেতু শিল্পোন্নয়ন নিগমের সব বোর্ড সদস্য থাকবেন। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের নানা দফতরের পদাধিকারী তথা প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ফলে, জমি, লাইসেন্স, দূষণ, দমকল, বিদ্যুৎ সহ বিভাগের জট কাটাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় থাকবে। উপরন্তু, নিগমের বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত হলে তা নিয়ে ভবিষ্যতে কোনও আইনি জটিলতা তৈরির আশঙ্কাও থাকবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন