শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহার করাতে ‘চাপ’

বিধবা মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য টাকার টোপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল অভিযুক্তের পরিবার ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। ওই মহিলার মেয়েকেও এলাকার নেতারা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার শামুকতলার রোড বাজার এলাকার রেল লাইনের পাশে ওই মহিলার পথ আটকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এলাকার এক যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০৬
Share:

বিধবা মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য টাকার টোপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল অভিযুক্তের পরিবার ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। ওই মহিলার মেয়েকেও এলাকার নেতারা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার শামুকতলার রোড বাজার এলাকার রেল লাইনের পাশে ওই মহিলার পথ আটকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এলাকার এক যুবকের বিরুদ্ধে। সে এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত। মহিলা সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়। মহিলাকে যশোডাঙা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথমে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে রেফার করা হয়। শামুকতলা থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়। মহিলার দাবি, পরপর দু’দিন শুক্র ও শনিবার তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে অভিযুক্তের স্ত্রী হাসপাতালে এসে ১০-২০ হাজার টাকা দিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছেন। বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়েকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। যদিও অভিযুক্তের স্ত্রী চন্দনা ভৌমিক বলেন, “আমি হাসপাতালে গিয়ে ওঁকে মিটমাট করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। আমার সঙ্গে গ্রামবাসীরা ছিলেন।”

তৃণমূলও এই ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সদস্য অরুণ দাস বলেন, “যে কোনও ঘটনা ঘটলেই এখন তৃণমূলের নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত যুবক আমাদের দলের সদস্য নয়। পুলিশ এর সঠিক তদন্ত করুক। আমরাও তাই চাই। এই ঘটনার সঙ্গে দল কোনও ভাবে জড়িত নেই।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বছর পাঁচেক আগে স্বামীর মৃত্যুর পরে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকেন ওই মহিলা। দিনমজুরির কাজ করে সংসার খরচ এবং মেয়েকে পড়ানোর খরচ জোগাড় করেন। ওই মহিলা জানান, ওই দিন সন্ধ্যেয় ওই যুবকের কুপ্রস্তাবে বাধা দিতেই রেল লাইনের ধারে ফেলে তাঁকে মারধর করা হয়। হঠাৎ কারও আসার শব্দ পেয়ে পালায় ওই যুবক। হাসপাতালে শুয়ে ওই মহিলা বলেন, “পুলিশ এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি বলে শুনেছি।

এ দিকে, অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা তৃণমূলের কর্মীদের নিয়ে এসে আমাকে টাকার টোপ দিচ্ছে। রাজি না হওয়ায় হুমকি দিচ্ছে। বাড়িতে গিয়ে আমার মেয়েকে প্রাণে মারারও হুমকি দিচ্ছে। আতঙ্কে রয়েছি।” এই ঘটনায় ওই মহিলা ও তাঁর মেয়েকে সর্বক্ষণ নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ধীরেন বর্মন।

বিজেপির আলিপুদুয়ার জেলা সম্পাদক গুণধর দাসও বলেন, “তৃণমূলের চাপে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে না।”

যদিও আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সবালের দাবি, “পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ঠিক নয়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক। তল্লাশি শুরু হয়েছে ওই মহিলা ও তাঁর মেয়েকে নিরাপত্তাও দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন