নিহত গোলাম শেখ। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কংগ্রেসকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই পক্ষের আরও দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বোমার স্প্লিন্টার তৃণমূলের দুই কর্মী জখম হয়েছেন বলেও অভিযোগ। দুই দলের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে মালদহের কালিয়াচক। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুর ও দারিয়াপুর এলাকায় ঘটনাগুলি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে নিহত কংগ্রেসকর্মীর নাম গোলাম শেখ (৩০)। গুলিবিদ্ধ কংগ্রেসকর্মীর নাম মুজাহিদ শেখ। তাঁর বাঁ পায়ে গুলি লেগেছে। অন্যদিকে গুলিবিদ্ধ তৃণমূলকর্মীর নাম জাহিদূর হক। তাঁর বাঁ হাতে গুলির আঘাত রয়েছে। বোমার ঘায়ে জখম হয়েছেন তৃণমূলের আজমল শেখ ও রফিক শেখ। সকলেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
মালদহের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “এলাকায় বড় পুলিশ বাহিনী রয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, রাত অবধি অবশ্য কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন সন্ধ্যা নাগাদ কালিয়াচক ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি অফিস থেকে একটি গাড়িতে নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী মহম্মদ আজমল শেখ-সহ চারজন নওদা যদুপুর এলাকায় ফিরছিলেন। ভাগলপুরের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা গুলি ছুড়তে থাকে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। একটি গুলি তৃণমূলকর্মী জাহিদুর শেখের বাঁ হাতে লাগে। বোমার আঘাতে আজমল ও রফিক জখম হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে এলাকায় হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর পরেই সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দারিয়াপুর এলাকায় পাল্টা হামলা শুরু হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূলের হামলায় গোলাম শেখ নামে এক দলীর কর্মীর বুকে গুলি লাগে। মুজাহিদ শেখের পায়ে গুলি লেগেছে। গোলাম শেখকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র মালদহ মেডিক্যাল কলেজে যান। মন্ত্রী বলেন, “কংগ্রেসের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখ ও তার দলবল লাগাতার আমাদের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখকে খুন করার চক্রান্ত করছে। এদিন বকুলকে না পেয়ে তাঁর ভাই আজমল শেখের উপর হামলা” তৃণমূল কারও উপরে হামলা করেনি বলে মন্ত্রী দাবি করেছেন।
দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “নওদা যদুপুর এলাকায় কংগ্রেসের কোন অস্তিত্ব নেই। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা প্রার্থীই দিতে পারিনি। এলাকার দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে।” সাংসদ জানান, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বকুল শেখের নেতৃত্বে এলাকায় সন্ত্রাস চলছে। এদিন ওদের হামলায় তাঁদের এককর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।” পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দুই জনের বিরুদ্ধেই থানায় খুন-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এদিন দুই গোষ্ঠীর গোলমালেই ঘটনাটি ঘটেছে। যদিও বকুল ও জাকির আলাদাভাবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।