স্থায়ী জেলা ইমাম প্রতিনিধি নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে নামার হুমকি দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার সরকারি ভাতাপ্রাপ্ত ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের একাংশ।
সোমবার উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি থানায় রসাখোয়া এলাকায় বৈঠক করে জেলা ইমাম মোয়াজ্জেম সমিতির তরফে ওই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে জেলার বাসিন্দা এমন কাউকে জেলা ইমাম প্রতিনিধি পদে নিয়োগ করা না হলে সমিতির তরফে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলাশাসকের দফতর ও কলকাতায় রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের দফতর ঘেরাও করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে, জেলাজুড়ে টানা বিক্ষোভ মিছিল করা হবে বলেও সমিতির দাবি।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলার রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকে সরকারি ভাতাপ্রাপ্ত ১৯৪১ জন ইমাম ও ১১১১ জন মোয়াজ্জেম রয়েছেন। তাঁরা জেলার ন’টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকার প্রায় আড়াই হাজার মসজিদে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের নামাজ পড়ানোর ও আজান দেওয়ার কাজ করেন। ওয়াকফ বোর্ডের অধীনস্থ ইমাম ও মোয়াজ্জেমরা ২০১২ সাল থেকে প্রতি মাসে যথাক্রমে ২৫০০ ও ১০০০ টাকা করে সরকারি ভাতা পান। সমিতির অভিযোগ, গত প্রায় তিন বছর ধরে ওয়াকফ বোর্ডের কর্তাদের কাছে স্থায়ী জেলা ইমাম প্রতিনিধি নিয়োগ করার দাবি জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি।
ফলে দীর্ঘদিন ধরে জেলায় আবেদনকারী বহু ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের সরকারি নথিভূক্তিকরণের কাজ আটকে রয়েছে। বিভিন্ন মসজিদে কর্মরত ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের কাছে সঠিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি নির্দেশ ও সুযোগ সুবিধার বার্তা না পৌঁছনোয় তাঁরা সমস্যায় নানা পড়েছেন। সেইসঙ্গে, কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়লে ইমাম ও মোয়াজ্জেমরা কার কাছে যাবেন, তাও বুঝে উঠতে পারছেন না। ওয়াকফ বোর্ড জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের কাজকর্ম পরিচালনা করে। জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের আধিকারিক অমল আচার্য বলেন, “বিষয়টি অনেক আগেই ওয়াকফ বোর্ডকে জানানো হয়েছে।”
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল গণির দাবি, “প্রশাসনিক কিছু জটিলতার জন্য উত্তর দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা এমন কাউকে স্থায়ী জেলা ইমাম প্রতিনিধি পদে নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।”