সীমান্তে অপরাধ রুখতে আলোচনা দু’দেশের বৈঠকে

সীমান্তে অপরাধমূলক কাজকর্ম ঠেকানো-সহ দুই দেশের বাণিজ্য উন্নয়ন, ছিটমহল সমস্যার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের নয়টি জেলা এবং ভারতের অংশে উত্তরবঙ্গের ৭ টি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হল। মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় বেলা সাড়ে ৯ টা থেকে প্রায় প্রায় চার ঘন্টা বৈঠক হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৪
Share:

সীমান্তে অপরাধমূলক কাজকর্ম ঠেকানো-সহ দুই দেশের বাণিজ্য উন্নয়ন, ছিটমহল সমস্যার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের নয়টি জেলা এবং ভারতের অংশে উত্তরবঙ্গের ৭ টি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হল। মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় বেলা সাড়ে ৯ টা থেকে প্রায় প্রায় চার ঘন্টা বৈঠক হয়। দুই দেশের সীমান্ত ব্যবহার করে অপরাধমূলক কাজকর্ম, পাচার, জঙ্গিদের নাশকতার চেষ্টা আটকানোর বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। উভয় দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিকে নিয়ে ৩ মাস অঅন্তর বছরে ৪টি রুটিন বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিন দিনের সফরে এসেছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি। এ দিন বৈঠক সেরে তারা দার্জিলিং যান। বুধবার তাঁদের ফেরার কথা।

Advertisement

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের চেয়ারম্যান তথা চপাইনবাবগঞ্জ জেলার জেলাশাসক এবং ডেপুটি কমিশনার মহম্মদ জাহাঙ্গির কবির বলেন, “আমরা সমস্ত রকম জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে। সীমান্ত এলাকার নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম ঠেকানোর বিষয়টি নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে জঙ্গি কার্যকলাপ, অস্ত্র, নেশার সামগ্রী, জালনোট পাচার, মানুষ পাচারের মতো বিষয় রয়েছে। তা রুখতে দুই দেশের প্রাশাসনিকস্তরে তথ্য বিনিময় করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সম্প্রতি বর্ধমান কাণ্জ নিয়ে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জাহাঙ্গির কবির বলেন, “রাজনৈতিক বিষয়। তা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। দুই দেশের তরফে দেখা হচ্ছে। তবে আমরা সমস্ত রকম জঙ্গি কার্যকলাপের বিরোধী।” বাংলাদেশের নওগাঁও, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারি, লালমণিরহাট, কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ছিলেন।

এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি বিভাগীয় কমিশনার বরুণ রায়, রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিম, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন, বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা। তাদের তরফে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সীমান্তে চোরাচালান, অস্ত্রপাচার, মানুষ পাচারের মতো অপরাধ রুখতে বছরে অন্তত ৪ টি রুটিন বৈঠক হবে উভয়দেশের সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলির জেলাশাসক, শুল্ক দফতর এবং প্রশাসনিক স্তরে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, সীমান্তে গুলি চালানোর মতো ঘটনা কমানোর দিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা দজানানো হয়েছে। কেন না সীমান্তে গোলাগুলিতে অনেক ক্ষেত্রে নিরীহ বাসিন্দাদের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

ফুলবাড়ি সীমান্তে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালুর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ওই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দুই দেশের যে দুটি জেলার অবস্থিত সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকরা বিষয়টি নিয়ে এ দিন আলোচনা করেছেন। তবে এ ব্যাপারে স্বারাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন দরকার। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু হলে সেখানকার সীমান্তবর্তী জেলাগুলির বাসিন্দারা উপকৃত হবেন বলে তাঁরা আশাবাদী। দুই দেশের মধ্যে পর্যটনের উন্নয়নে নতুন বাস পরিষেবা চালুর কথাও হয়েছে।

প্রতিনিধিরা জানান, এ দেশের সংশোধনাগারগুলিতে বাংলাদেশের অনেক বন্দি রয়েছেন। তেমনই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সংশোধনাগারগুলিতে এ দেশের অনেক বন্দি রয়েছে। পরিবারকের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় জেলের মেয়াদের পরেও তারা দেশে ফিরতে পারছেন না। বাংলাদেশের তরফে এ দেশের জেলাশাসকদের এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশের জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তাদের সেই তালিকা এ দিন দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাতে সহজে ছাড়া পায় এবং দেশে ফেরে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন