সারের যোগান কমে যাওয়ায় রবি মরশুমের চাষের আগে বিপাকে পড়েছেন কোচবিহারের কৃষকরা। বিশেষভাবে কমে গিয়েছে ইউরিয়া সারের যোগান।
কৃষকদের অভিযোগ, রবি মরসুমে আলু, তামাক, পাট ও সব্জি চাষে সারের ব্যাপক চাহিদা থাকে। ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ী সারের কালোবাজারিতে নেমে পড়েছেন। সে জন্য বাজারে সার পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তাঁদের দাবি, গত দুই মাস থেকে কোচবিহারের ইউরিয়া বোঝাই কোনও মালগাড়ি আসেনি। তাই এর যোগান কমে গিয়েছে। বর্তমানে অন্তত পাঁচ হাজার টন ইউরিয়া সার বাজারে ঢুকলে সমস্যা মিটে যাবে। কৃষি দফতরের পক্ষ থেকেও সারের সঙ্কটের কথা স্বীকার করা হয়েছে। বিষয়টি কৃষি দফতরের অধিকর্তাকেও জানানো হয়েছে। কোচবিহার জেলা কৃষি আধিকারিক আশিস পাত্র বলেন, “ইউরিয়া সারের যোগান কিছুটা কম রয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। সার না-আসার জন্যই ওই সমস্যা হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখছি। তবে এর মধ্যে ইউরিয়া সার জেলায় ঢুকবে বলে খবর পেয়েছি।”
কৃষি প্রধান কোচবিহার জেলায় দিনহাটা, সিতাই, মাথাভাঙা, কোচবিহার সদরের মতো কয়েকটি এলাকায় রবি মরসুমের চাষের উপর নির্ভর করেন কয়েক লক্ষ কৃষক। আলু, তামাক কোচবিহারের অর্থকরী ফসল। জেলার ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তামাক চাষ হয় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে, সব্জি চাষ হয় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং পাট চাষ হয় ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে। তাই ইউরিয়া সারের প্রয়োজন এই সময় সব থেকে বেশি। কিন্তু বাজারে অমিল সার। মাথাভাঙার কুর্শামারির কৃষক মন্টু শীল, দীপক বর্মনেরা আলু চাষে নেমেছেন। তাঁরা বলেন, “জমি তৈরি করে আলু চাষে নেমেছি। এখন সারের প্রয়োজন। কিন্তু যেখানে যাচ্ছি সার পাচ্ছি না।”
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রবি মরসুমে জেলায় প্রায় ২০ মেট্রিক টন সার প্রয়োজন। কিন্তু এই পরিমাণ সার এখনও জেলায় পৌঁছায়নি। কোচবিহার স্টেশনে সার বোঝাই মালগাড়ি না আসার জন্যই ওই সমস্যা হচ্ছে। বিভিন্ন সার কোম্পানি রাঙাপানিতে সার নামিয়ে সেখান থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর জেলায় বেশির ভাগ সার পাঠিয়ে দিচ্ছে। ফলে, কোচবিহারে পর্যাপ্ত সার পাওয়া যাচ্ছে না। সার ও কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ী সমিতির কোচবিহার জেলার সম্পাদক জগবন্ধু সাহা বলেন, “সারের যোগান কম থাকাতেই আমরা সরবরাহ করতে পাচ্ছি না। মূলত ইউরিয়া নিয়ে ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে।”