জলপাইগুড়ি পথ অবরোধে অভিভাবকেরা।—নিজস্ব চিত্র।
ছাত্রদের থেকে উন্নয়ন ফি বাবদ টাকা ধার্য করার প্রতিবাদে অভিভাবকেরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। বুধবার সকালে জলপাইগুড়ির পোস্ট অফিস মোড়ে ফণীন্দ্রদেব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক অভিভাবকের প্রায় দুঘণ্টা এই অবরোধে যানজটে নাকাল হতে হয় স্কুল পড়ুয়া ও নিত্য যাত্রীদের। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে এক সময় বচসা শুরু হয় অটোচালক ও পথচারীদের। তাদের হেনস্থারও অভিযোগ ওঠে অবরোধকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত বছর স্কুল থেকে ছাত্রদের মাথাপিছু বছরে দুশো টাকা উন্নয়ন ফি বাবদ নেওয়া হয়। এ বার সেটা ২৪০ টাকা করা হয়েছে। স্কুলের কী উন্নয়নের জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে, তা স্পষ্ট করে জানাচ্ছেন না প্রধানশিক্ষক। সুজিত ঘোষ, প্রদীপ ভৌমিকের মত অনেক অভিভাবক প্রশ্ন তোলেন, “সরকারি স্কুলে কেন টাকা নেওয়া হবে?”
যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদলচন্দ্র দাস বলেন, “আমাদের নিরুপায় হয়ে উন্নয়ন ফি নিতে হচ্ছে। ওই টাকা না নেওয়া হলে বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে পরীক্ষার খাতা কিনব কেমন করে?” সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায়। তিনি বলেন, “শিক্ষা দফতর থেকে বছরে স্কুলগুলিকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হলেও ওই টাকায় শহরের স্কুলগুলির বিদ্যুতের বিল-সহ অন্য খরচ মিটছে না। তাই টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের স্পষ্ট বলা আছে পড়ুয়াদের থেকে টাকা নেওয়া যাবে না।”
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ অভিভাবকরা ব্যস্ততম পোস্ট অফিস মোড় এলাকার রাস্তায় বসে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এমনকি পথচারীদেরও রাস্তা পারাপার করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। রাস্তার দুপাশে আটকে যায় স্কুল-সহ সাধারণ যাত্রীবাহী বাস। কয়েকজন পথচারী রাস্তা পারাপারের অনুমতি চাইতে গেলে অভিভাবকেরা সাফ জানিয়ে দেন, স্কুল কর্তারা উন্নয়ন ফি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এক সময় এক অটো চালক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা চাইলে শুরু হয় বচসা, ধাক্কাধাক্কি। নিরুপায় হয়ে অটো চালক ঘুরপথে চলে যান। ওই পরিস্থিতিতে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়।