তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে শৌচাগার। ছবি: রাজু সাহা।
ডুয়ার্সের শামুকতলা হাটের বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ী মহলে। ক্ষুব্ধ, নাজেহাল ক্রেতারাও। বারবার হাট সংস্কারের দাবি জানিয়েও ফল না মেলায় আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তাঁদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই জল কাদায় নাজেহাল হতে হচ্ছে তাঁদের। হাট চত্বরে পানীয় জলের কোনও বন্দোবস্ত নেই। দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সুলভ শৌচাগার তৈরি হলেও তিন বছর ধরে সেটা অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। গোটা হাট জুড়ে আবর্জনার স্তুপ। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হওয়ায় মাছ মাংসের নোংরা জল পড়ে থাকছে রাস্তা জুড়ে। কয়েকটি হাইড্রান্ট তৈরি হলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। ফলে গোটা হাট জুড়েই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। তারই মধ্যে চলছে বিকিকিনি।
হাটের বেশ কয়েকটি জায়গায় শেড ভেঙে পড়লেও সেগুলি সংস্কারের কেউ উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। প্রতি শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিন। স্থানাভাবে পাইকারি সব্জি বাজার বসে প্রধান সড়কের উপর। এতে স্কুলের ছাত্র ছাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচন্ড অসুবিধায় পড়তে হয়। করুণ অবস্থা গরু, ধান ও পাট, ও ছাগল হাটির ব্যবসায়ীদেরও।
অভিযোগ, শামুকতলা হাট থেকে প্রতিবছর জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে। অথচ হাট সংস্কারের কাজে সামান্য অংশও ব্যয় করেনা। ব্যবসায়ী জামসেদ মিঁয়া বলেন,“জল কাদার জন্য গরু হাটে দাঁড়ানো যায়না। পানীয় জল, শৌচাগারের সমস্যা জটিল আকার নিয়েছে। শীঘ্রই হাট সংস্কারের কোনও উদ্যোগ না নেওয়া হলে আমরা খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।”
প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হওয়ায় আলাদা করে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদ গঠনের পরেই আলিপুরদুয়ার জেলার হাট গুলিতে সংস্কারের কাজে গতি আসবে। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গাব্রিয়েল হাঁসদা জানিয়েছেন হাট সংস্কারের শুধু আশ্বাসই মিলেছে। গত বছর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, বাস্তুকার সহ এক প্রতিনিধি দল এসে শামুকতলা হাট পরিদর্শন করে সমস্যা খতিয়ে দেখেছেন। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন শীঘ্রই হাট উন্নয়নে কাজ শুরু করা হবে। কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে জেলা পরিষদ।
দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সুলভ শৌচাগার নির্মাণ হলেও তিন বছর ধরে সেটা তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। জেলা পরিষদ সেটা চালুর কোন উদ্যোগ নেয়নি। আমরা শৌচাগার বানানোর উদ্যোগ নিলেও জমির অভাবে সেটা নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, জেলার বড় হাট গুলির মধ্যে শামুকতলা হাট অন্যতম। এই হাটের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। বেশ কিছু স্কিম তৈরী করা হয়েছে। আমরা আন্তরিক ভাবে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছি।