গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সোনা হাতবদল হবে। সেই মতো শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ উপনগরীতে নজর রেখেছিলেন তাঁরা। বুধবার সন্ধ্যার পরে নেপালের দু’জন বাসিন্দা গাড়িতে শিলিগুড়িতে আসেন। উত্তরায়ণে তাদের অপেক্ষায় ছিলেন আরও দু’জন। সোনা পাচারের সময় হাতেনাতে তাঁদের ধরে ফেলেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। ২৮ কেজি সোনার বাট-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। আটক হয় দু’টি এসইউভি গাড়িও।
প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, শিলিগুড়িকে ব্যবহার করে নেপাল থেকে ভারতে সোনা পাচারের ছক কষেছে আন্তর্জাতিক কোনও পাচার চক্র। যে দু’টি গাড়ি আটক করা হয়েছে, তার একটির নম্বর নেপালের। অন্য গাড়িটিতে পশ্চিমবঙ্গের নম্বর প্লেট লাগানো ছিল। নম্বরগুলি আসল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের আইনজীবী রতন বণিক জানান, ধৃতদের মধ্যে অং কর্মা শেরপা এবং শ্রীবিষ্ণু ফুয়েল নেপালের বাসিন্দা। অন্য দু’জন শ্যামসুন্দর মিশ্র দিল্লির ও সঞ্জয় মিশ্রর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে মোট ৪১ টি সোনার বাট উদ্ধার হয়েছে। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। সোনার বাটগুলিতে সুইৎজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও হংকংয়ের নাম খোদাই রয়েছে। দু’দিন আগেই শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানা এলাকা থেকে ৬ কেজি ওজনের সোনার বাট উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা।
রতনবাবু বলেন, “সোনার বাটগুলি বিদেশে তৈরি বলে লেখা রয়েছে। দু’দিন আগে উদ্ধার হওয়া সোনার সঙ্গে সাদৃশ্যও রয়েছে।” বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ১৩ দিন জেল হেফাজত দেন। গত দু’মাসে চার বার উত্তরায়ণ ও লাগোয়া এলাকা থেকে বিদেশি সোনা উদ্ধার হল। সোনা পাচার রুখতে ভারত নেপাল সীমান্ত পানিট্যাঙ্কিতে কড়া নজরদারি প্রয়োজন বলে দাবি কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের। শিলিগুড়িতে এই ধরনের চোরাই মাল হাতবদল করে নেপালে যাওয়ার সুবিধা বলে এই এলাকাকেই বাছা হচ্ছে বলে মত পুলিশ কর্তাদের। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “চুরি যেমন হচ্ছে, তেমন ধরাও পড়ছে। তবে সীমান্তে আরও সজাগ পাহারা থাকলে এ ধরনের অবস্থা এড়ানো যাবে।”