১০০ দিন কাজে গ্রামের রূপ খুলেছে, পর্যটনকেন্দ্রের দাবি

১০০ দিনের কাজের সুবাদে গ্রামবাসীরা নদী-ভাঙন রুখতে হাত লাগিয়েছেন। গড়ে তুলেছেন রাস্তা। কাটা হয়েছে ঝোপজঙ্গল। রূপ খুলেছে গ্রামের। এলাকার সৌন্দর্যকে ব্যবহার করে বিকল্প রোজগারের জন্য বাসিন্দারা এখন গ্রাম ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবি তুলেছেন। সেই দাবি মতো প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ভাবে গ্রামে পিকনিক স্পট তৈরির পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চ্যাংরাবান্ধা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০১:২৬
Share:

১০০ দিনের কাজের সুবাদে গ্রামবাসীরা নদী-ভাঙন রুখতে হাত লাগিয়েছেন। গড়ে তুলেছেন রাস্তা। কাটা হয়েছে ঝোপজঙ্গল। রূপ খুলেছে গ্রামের। এলাকার সৌন্দর্যকে ব্যবহার করে বিকল্প রোজগারের জন্য বাসিন্দারা এখন গ্রাম ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবি তুলেছেন। সেই দাবি মতো প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ভাবে গ্রামে পিকনিক স্পট তৈরির পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

Advertisement

মেখলিগঞ্জ ব্লকের চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বোকনাবান্ধা নামে ওই গ্রামকে ইংরেজি ‘ইউ’ আকৃতির মতো ঘিরে রয়েছে ধরলা নদী। গত কয়েক বছরে পাড় ভেঙে বসতি এলাকা উজাড় করে নদী প্রায় দেড় কিলোমিটার চওড়া হয়ে এগিয়ে এসেছে। বিঘার পর বিঘা চাষজমি তলিয়ে গিয়েছে নদীগর্ভে। এই নদী ভাঙন দেখে ভিটেমাটি নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। গত বছর গ্রামে আতঙ্ক এতটাই তীব্র হয় যে, এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতেই বাসিন্দারা গ্রাম রক্ষার দাবিতে সরব হন। এগিয়ে আসে পঞ্চায়েত।

পঞ্চায়েত প্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের দিলীপ রায় বলেন, “বাসিন্দাদের দাবি মেনে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গত ৪ নভেম্বর থেকে ভাঙন প্রতিরোধ ও রাস্তা তৈরির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়। গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দু’দফায় ১৩ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পে ৪৮৬ জন বাসিন্দা গড়ে ১৭ দিন কাজ করেছেন। আশা করছি আগামী বর্ষায় নদী-ভাঙনের হাত থেকে গ্রামবাসীরা রক্ষা পাবেন।”

Advertisement

উন্নয়নের কাজ শুরু হতেই ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে গ্রামের চেহারা। ঝোপজঙ্গল কেটে, খানাখন্দ ভরাট করে জারুল বনের পেট চিরে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এবং আট ফুট চওড়া মেঠো রাস্তা তৈরি করে ফেলেন গ্রামবাসীরা। নীল জলধারার ওই নদীর ধারে রয়েছে বিরাট বালির চর। নদীর গা ঘেঁষে বাঁশবাগান। সবুজ চায়ের গালিচা। রাস্তা তৈরি হতেই গ্রামের রূপ দেখে আত্মহারা হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। এলাকার সৌন্দর্যকে ব্যবহার করে বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থার দাবি নিয়ে গত ২৯ নভেম্বর থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেন তাঁরা। প্রায় দেড় হাজার মানুষের ওই গ্রামের অনেকেই গত ক’বছরে নদী-ভাঙনে চাষজমি হারিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন। রোশনা বিবি, ভারতী রায়ের মতো কয়েক জন মহিলা বলেন, “কয়েক মাস আগেও ছোট গাড়ি গ্রামে ঢুকতে পারত না। এখন যাতায়াতের অসুবিধা নেই। এখানে পর্যটনকেন্দ্র হলে ঘরের ছেলেদের কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না।” বিডিও অনির্বাণ দত্ত বলেন, “এটাই তো চেয়েছিলাম। কর্মসংস্থানের কথা ভেবে ওই এলাকায় প্রাথমিক ভাবে পিকনিক স্পট গড়ে তোলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।” কাজের মান দেখে খুশি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী তৃণমূলের অসীমা নন্দী। তিনি বলেন, “এ ভাবে প্রতিটি গ্রামে কাজ হলে কর্মসংস্থান সুযোগ বাড়বে।” পিকনিক স্পট তৈরির কাজ কবে শুরু হবে, সেই আশাতেই দিন গুনছেন বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন