দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির খাসতালুক ছিল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ। সেখানেই পুরসভা হাতছাড়া হতে চলেছে কংগ্রেসের। সৌজন্যে বিক্ষুব্ধ সাত কাউন্সিলর। তাঁরা পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন। গত বাইশ বছর ধরে চেয়ারম্যান থাকা অরুণবাবু কিন্তু পণ করেছেন, তিনি পদ ছাড়বেন না।
গত বছর এখানে পুরভোটে একটিও আসন পায়নি তৃণমূল। কিন্তু এখন ক্ষমতার কাছাকাছি চলে এসেছে। কী ভাবে? গত বছর ১৭ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫টি আসন। বিজেপি ও সিপিএম একটি করে আসন দখল করে। এর পরেই ভাইস চেয়ারম্যান হতে না পেরে তৃণমূলে যোগ দেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর বসন্ত রায়। পরে বিজেপি কাউন্সিলর অমিত দেবগুপ্তও শাসক দলে যোগ দেন। এ দিন চেয়ারম্যান অরুণবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন বসন্ত ও অমিত। সেই অনাস্থাপত্রে আছে কংগ্রেসের সাত কাউন্সিলরের সই। সেই দলে রয়েছেন দীপা দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কাউন্সিলর তথা ভাইস চেয়ারম্যান কার্তিকচন্দ্র পাল। অনাস্থাপত্রে সই করেই ওই সাত জন কলকাতার ট্রেন ধরেছেন। দলীয় সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে তাঁরা আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেবেন।
কার্তিকবাবুর দাবি, ‘‘দু’দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কালিয়াগঞ্জের উন্নয়ন করতে কংগ্রেস ব্যর্থ। তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে। তাই উন্নয়নের স্বার্থে পুরসভাও তৃণমূলের দখলে থাকা উচিত।’’ অনাস্থাপত্রটি এখন অরুণবাবুর কাছে। তাঁকেই তলবি সভা ডাকতে হবে। জেলাশাসক রণধীর কুমার বলেছেন, ‘‘চেয়ারম্যানকে ১৫ দিনের মধ্যে তলবি সভা ডাকতে হবে। সেখানেই ভোটাভুটিতে বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে।’’ অরুণবাবুও নাছোড়বান্দা। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দরকার পড়লে মমতার সঙ্গে দেখা করব এবং তৃণমূলে যোগ দিয়ে চেয়ারম্যান পদ ধরে রাখব।’’
দীপা সবই শুনেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়ে যে সব কাউন্সিলর তৃণমূলের প্রলোভনে পা দিলেন, মানুষের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে।’’ এর জবাবে তৃণমূল জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেছেন, ‘‘প্রলোভনের রাজনীতি তৃণমূল করে না।’’