মমতার বার্তা না পেয়ে হতাশ সিঙ্গুর

না শিল্প, না চাষ— সিঙ্গুরের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও দিশা দেখালেন না তিনি। ফলে, সিঙ্গুরবাসীর অনেকেই হতাশ। বিরোধীরা বলছেন, এটাই প্রত্যাশিত। সিঙ্গুর এখন মমতার ‘গলার কাঁটা’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুড়াপ শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

মঙ্গলবার গুড়াপের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: দীপঙ্কর দে

এক বছর বাদে তিনি সিঙ্গুরের জেলায় এলেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন। কিন্তু মঙ্গলবার হুগলির গুড়াপের ওই সভা থেকে সিঙ্গুর নিয়ে কোনও কথা বললেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। না শিল্প, না চাষ— সিঙ্গুরের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও দিশা দেখালেন না তিনি। ফলে, সিঙ্গুরবাসীর অনেকেই হতাশ। বিরোধীরা বলছেন, এটাই প্রত্যাশিত। সিঙ্গুর এখন মমতার ‘গলার কাঁটা’।

Advertisement

লোকসভা ভোটে জিতে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরের সেই জমিতে শিল্প গড়ার ডাক দিয়েছেন। গত শুক্র থেকে রবিবার, এসএফআই এবং ডিওয়াইএফ— সিপিএমের দুই শাখা সংগঠনের কাছে সিঙ্গুরের ওই ভেস্তে যাওয়া গাড়ি প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষজন কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন। ওই দাবি নিয়েই আগামী মাসে সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি।

জমি আন্দোলনের সেই সিঙ্গুরে শিল্পের দাবি যখন ক্রমশ বাড়ছে, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, এ দিন গুড়াপের বৈঠক থেকে কোনও বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, বিধানসভার বিগত অধিবেশনে তিনি কৃষিমন্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট প্রশ্নের নিজে উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, সিঙ্গুরের মানুষ কৃষিকাজে উৎসাহ হারাচ্ছেন। ফলে, অনেকেরই ধারণা ছিল, বিকল্প কোনও কর্মসংস্থানের দিশা দেখাবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা হয়নি।

Advertisement

সিঙ্গুরের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ভুল যে হয়েছিল, তা তো হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। কিন্তু পস্তানো ছাড়া আর কী করার আছে?’’ গোপালনগর কোলেপাড়ার বাসিন্দা অমিয় ধারার বক্তব্য, ‘‘প্রকল্প এলাকার কিছু জমিতে চাষ হচ্ছে। যেখানে কারখানার শেড ছিল, সেই জায়গায় হচ্ছে না। যেখানে চাষ সম্ভব নয়, সেখানে রাজ্য সরকার বিকল্প কিছু চিন্তা করুক। দরকারে আমরা সহযোগিতা করব।’’ স্থানীয় ডিওয়াইএফআই নেতা দেবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘সিঙ্গুরের উপর দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী গুড়াপে গেলেন। উনি সিঙ্গুর নিয়ে কী বলেন, তা শুনতে অনেকেই মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু সিঙ্গুর নিয়ে কিছু বলা বা এখানে দাঁড়ানোর মুখ তাঁর আর নেই।’’ বিষয়টি নিয়ে হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক তথা জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা বেচারাম মান্না কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বর্তমান রাজ্য সরকার বাম আমলে টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এক সময়ের চার ফসলি সেই জমিতে চাষ আর হয়নি বললেই চলে। ওই চৌহদ্দির বেশির ভাগটাই এখন উলুখাগড়া আর আগাছায় ঢাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন