Petrol

Mobil: পোড়া মোবিলও দামি, হাতি তাড়াতে হিমশিম

শুধু পেট্রল আর ডিজ়েলই নয়, দাম বেড়েছে মোবিলেরও। আর পোড়া মোবিল!

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪০
Share:

শুধু পেট্রল আর ডিজ়েলই নয়, দাম বেড়েছে মোবিলেরও।

শুধু পেট্রল আর ডিজ়েলই নয়, দাম বেড়েছে মোবিলেরও। আর পোড়া মোবিল! এক বছরে তার দাম হয়েছে দ্বিগুণ। যা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে বন দফতর। হাতি তাড়াতে হুলা জ্বালাতে হয়। আর হুলা জ্বালাতে লাগে পোড়া মোবিল। দাম বাড়ার পাশাপাশি কমেছে জোগানও। পোড়া মোবিল দিতে না পারলে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে বনকর্মীদের।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড ব্লক এলাকায় সারা বছরই হাতির দলের আনাগোনা থাকে। ফসল বাঁচাতে হাতি তাড়াতে হয় স্থানীয়দের। এ ক্ষেত্রে তাঁদের হাতিয়ার হল হুলা। লম্বা বাঁশের মাথায় বাঁধা হয় চট বা ছেঁড়া জামাকাপড়। তাতে পোড়া মোবিল লাগিয়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণত বন দফতর থেকে হাতি তাড়ানোর জন্য হুলাপার্টিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বহু ক্ষেত্রে স্থানীয়েরাই এই ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। হাতির দল এলাকায় এলেই গ্রামের বাসিন্দারা বন দফতরের স্থানীয় বিট বা রেঞ্জ অফিসে পোড়া মোবিল নিয়ে যান।

গড়বেতার তিনটি ব্লকের বন দফতরের রেঞ্জ অথবা বিট অফিসগুলিকে পোড়া মোবিল সরবরাহ করে চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা ও তার আশেপাশের এলাকার মোটর গ্যারাজগুলি। আগে বন দফতর বিনা পয়সায় পোড়া মোবিল দিত গ্রামবাসীদের। কারণ এক বছর আগেও পোড়া মোবিলের দাম ছিল লিটার পিছু ২৫-৩০ টাকা। এখন তা হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। এর সঙ্গে পরিবহণ ব্যয় ধরলে লিটারে ৬০ টাকারও বেশি খরচ করতে হয় বন দফতরকে। বন দফতরের আমলাগোড়ার রেঞ্জার বাবলু মান্ডি বলেন, ‘‘১৪-১৫ টি হাতি থাকলে একদিনে এক ড্রাম পোড়া মোবিল শেষ হয়ে যায়। এক ড্রাম পোড়া মোবিল জোগাড় করতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকার মতো। হাতির দল যদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তখন পোড়া মোবিলের খরচের পরিমাণও বাড়ে।’’ আড়াবাড়ির রেঞ্জার মলয়কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘সুযোগ বুঝে পোড়া মোবিলেরও দাম বাড়ছে।’’ তাতেই বাড়ছে সমস্যা। সম্প্রতি গোয়ালতোড়ের রামগড় সংলগ্ন কুসমাশুলি, মোহনপুর এলাকার কিছু গ্রামবাসী হাতি তাড়াতে পোড়া মোবিল নিতে যান বন দফতরের গোয়ালতোড় রেঞ্জে। পর্যাপ্ত পোড়া মোবিল না থাকায় বনকর্মীরা দিতে পারেননি। হাতি তাড়ানোর ‘তেল’ না পেয়ে সে দিন দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। স্থানীয় ভুবনচন্দ্র সিংহ, লক্ষ্মীরাম মাহাতোরা বলছিলেন, ‘‘তেল (পোড়া মোবিল) না পেলে হুলা জ্বালাব কী করে? হাতির ভয়ে সারা রাত জেগেই ছিলাম।’’ বন দফতরের গোয়ালতোড়ের রেঞ্জার খুরশিদ আলম মানছেন, ‘‘সে দিন পোড়া মোবিল কম থাকায় দিতে পারিনি।’’

Advertisement

চন্দ্রকোনা রোডের এক গ্যারাজের কর্মচারী জানালেন, বিভিন্ন গাড়িতে দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পরে মোবিলের পোড়া অংশ গাড়ির মালিক ফেলে দেন। ইঞ্জিন ভাল রাখতে নতুন মোবিল ব্যবহার করেন। সেই পোড়া মোবিল না ফেলে সংগ্রহ করে রাখেন গ্যারাজের মালিকেরা। ওই কর্মীর কথায়, ‘‘পোড়া মোবিলের চাহিদা এখন বেড়েছে। ফলে দামও চড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন