হাইকোর্টে সম্পত্তি-মামলা

এ বার নজরে বিরোধী বিধায়করাও

সম্পত্তি যা ছিল, মন্ত্রী বা বিধায়ক হওয়ার পর সেটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। রাজ্যের শাসক দলের এমন ১৯ জন বিধায়ক-মন্ত্রীর ফুলেফেঁপে ওঠা সম্পত্তির উৎস জানতে মাস দেড়েক আগে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে।

Advertisement

শমীক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

সম্পত্তি যা ছিল, মন্ত্রী বা বিধায়ক হওয়ার পর সেটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। রাজ্যের শাসক দলের এমন ১৯ জন বিধায়ক-মন্ত্রীর ফুলেফেঁপে ওঠা সম্পত্তির উৎস জানতে মাস দেড়েক আগে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল আরও ১০০ বিধায়কের নাম।

Advertisement

মামলার প্রথম শুনানির সময় শাসক দলের নেতাদের অভিযোগ ছিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিরোধীরা। আবেদনকারী বিপ্লব চৌধুরীর আইনজীবী অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, গত সপ্তাহে অতিরিক্ত হলফনামার আকারে নতুন যে নামের তালিকা তাঁরা হাইকোর্টে জমা দিয়েছেন, তাতে শুধু শাসক দল নয়, বিরোধী দলগুলিরও বেশ কয়েক জন বিধায়কের নাম রয়েছে। তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ কোনও ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ, কোনও ক্ষেত্রে ১৬০ শতাংশ বেড়েছে বলে দাবি আবেদনকারীর।

তবে সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগের পরিমাণ শাসক দলের বিধায়কদের বিরুদ্ধেই বেশি। যেমন নতুন তালিকায় নাম রয়েছে শাসক দলের উত্তর ২৪ পরগনার এক বিধায়কের। তিনি ২০১১ এবং ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সম্পত্তির হিসেব দাখিল করেছিলেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১১-র তুলনায় ২০১৬ সালে তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ৮০৩ গুণ! একই ভাবে শাসক দলের পূর্ব কলকাতার এক বিধায়কের সম্পত্তি বেড়েছে ২৯৫ শতাংশ।

Advertisement

বিপ্লববাবু জানান, হাইকোর্টে ফের একটি আবেদন পেশ করে বলা হবে, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির পরিমাণের সঙ্গতি না থাকলে কেন তা নেই — তা জানার অধিকার রয়েছে ভোটারদের। মামলাকারীর বক্তব্য, আয় আর সম্পত্তির মধ্যে ফারাক থাকলে অতিরিক্ত অংশ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিক আদালত।

মামলার শুরুতে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ প্রথম তালিকায় থাকা ১৯ জন বিধায়ক ও মন্ত্রীকে তাঁদের সম্পত্তির উৎস নিয়ে হলফনামা জমা দিতে বলেছিলেন। এ জন্য দেড় মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ১০০ জনের দ্বিতীয় তালিকা জমা দিলেন বিপ্লববাবু।

তৃণমূল সূত্রের খবর, মন্ত্রী, বিধায়কদের অনেকেরই হলফনামা তৈরি করতে কালঘাম ছুটছে। রাজ্যের প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ জানান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টরা যে সম্পত্তির খতিয়ান তৈরি করে দিচ্ছেন, তা আদালতে দাখিল করতে রাজি হচ্ছেন না অভিযুক্ত মন্ত্রী ও বিধায়কদের আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে হেলাফেলা করে হলফনামা দেওয়া যায় না। সম্পত্তির পরিমাণ ও আয়ের উৎস স্বচ্ছ ভাবে জানানো প্রয়োজন। তাই বারবার হিসেব কষা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন