ঘুম না পাড়িয়ে ঘুম কেড়েছে ডার্ট

ঘুমপাড়ানি ডার্টটা ছুড়ে নিশ্চিন্ত গলায় বনকর্মী জানিয়ে ছিলেন, ‘‘আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন, ও ঘুমে ঢলে পড়বে। তার পর পাকড়াও করতে আর কতক্ষণ!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৭
Share:

ডার্টবিদ্ধ বাঁদর না পারছে বসতে, না পারছে শুতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

ঘুমপাড়ানি ডার্টটা ছুড়ে নিশ্চিন্ত গলায় বনকর্মী জানিয়ে ছিলেন, ‘‘আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন, ও ঘুমে ঢলে পড়বে। তার পর পাকড়াও করতে আর কতক্ষণ!’’

Advertisement

ছ’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তার চোখে ঘুম নেই। পাকড়াও তো দূরের কথা। তবে, ডার্টবিদ্ধ বাঁদরটিকে দেখে এখন ময়নাগুড়ির বার্নিশ বাজারের বাসিন্দারাই বলছেন, ‘‘এমন জানলে কে আর অভিযোগ করত, বেচারা এখন প্রাণে বাঁচলে হয়!’’ কেন?

বনকর্মীর ঘুম পাড়ানি গুলিতে সে কাবু তো হয়ই’নি, উল্টে মলদ্বারের মুখে ডার্টটি বিঁধে থাকায় দিনভর ছটফট করে বেড়াচ্ছে বাঁদরটি
(রেসাস মাংকি)।

Advertisement

তার এই নিদারুণ অবস্থা দেখে গত দু’দিন ধরে বন দফতরও, কখনও খাঁচা পেতে কখনও বা তার পিছু ধাওয়া করে ধরার চেষ্টা করছ বটে, কিন্তু সে বাঁদর ধরা দিলে তো!

ডার্ট-বিদ্ধ অবস্থাতে সে না পারছে ডাল থেকে ডালে লাফ-ঝাঁপ করতে, না পারছে কোথাও একটু সুস্থির হয়ে বসতে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ জন্য অবশ্য বনকর্মীদেরই দুষছেন— অমন বে-জায়গায় ডার্ট মারার কী দরকার ছিল?

বন কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘আসলে ঘুম পাড়ানি ওযুধের ডোজের পরিমাপটা ঠিক হয়নি। সে জন্যই ডার্ট লাগা সত্ত্বেও ঘুমোয়নি সে।’’ বেশি ডোজ দিলে পাছে গাছ থেকে পড়ে মারা যায়, তাই এই ডোজ একটু কমই দেওয়া হয়েছিল। বিপত্তি ঘটেছে তাতেই।

দিন কয়েক ধরে তার দাপাদাপিতে উত্তরবঙ্গের ছোট্ট জনপদটা দিশেহারা হয়ে উঠেছিল। উঠোনে কলা-মুলো, সব্জি রাখার উপায় তো ছিলই না, বাজার থেকে হাতে বাজারের থলি নিয়ে বাড়ি ফেরাও দায় হয়ে উঠেছিল।

হৃষ্টপুষ্ট বাঁদরটার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে বার্নিশের বাসিন্দারা তাই অভিযোগ জানিয়েছিলেন বন দফতরে। গত শুক্রবার, তার জেরেই ঘুম পাড়ানি গুলি। ঘটনাটি কানে গিয়েছে, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের। বলছেন, ‘‘উচিত ছিল ডোজের পরিমাপটা ঠিক করা। প্রয়োজনে জাল নিয়ে যেতে পারতেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন