State News

ঝুলে থাকা পঞ্চায়েতের দায়িত্বে বিডিও-এসডিও-ডিএম, বিজ্ঞপ্তি জারি

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, পুরনো বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পরেও যে সব অঞ্চল, ব্লক বা জেলায় নতুন বোর্ড গঠন করা সম্ভব হবে না, সেগুলির দায়িত্ব বর্তাবে বিডিও, এসডিও এবং ডিএম-দের কাঁধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ২২:৩০
Share:

—ফাইল চিত্র।

ঝুলে থাকা পঞ্চায়েতগুলোয় প্রশাসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল রাজ্য সরকার। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত দখলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার জেরে পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই অনেকগুলি বোর্ড গঠন আটকে যেতে পারে। কিন্তু তার জেরে পঞ্চায়েতের কাজ আটকে যাক, এমনটা চায় না রাজ্য সরকার। সেই কারণেই মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।

Advertisement

গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ— তিন স্তরেই বহু আসন এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে শাসক দল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের নজির এই প্রথম নয় রাজ্যে। কিন্তু এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরিমাণ সর্বোচ্চ— ৩৪ শতাংশের আশেপাশে।

প্রত্যেকটি বিরোধী দলের অভিযোগ, তীব্র সন্ত্রাসের আবহে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের এই নজির গড়েছে তৃণমূল। তবে তৃণমূল পাল্টা বলেছে, বিরোধীদের সংগঠন নেই, ব্যর্থতা ঢাকতে সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন
এ বার কি ১৭ পুরসভাতেও প্রশাসক বসাবে রাজ্য সরকার?

শাসক-বিরোধীর এই চাপানউতোর সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। মামলাটির শুনানি শেষও হয়ে গিয়েছে। তবে রায় ঘোষণা এখনও বাকি এবং কবে রায় দেওয়া হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ দিকে আবার গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে এসেছে। মেয়াদ শেষের আগে রায় না বেরোলে পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই অনেক বোর্ড গঠন আটকে যাবে। রায় যদি বেরিয়ে যায় এবং তা যদি তৃণমূল তথা শাসকের বিপক্ষে যায়, তা হলেও একই অবস্থা হবে। এই অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতেই প্রশাসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য সরকার।

আরও পড়ুন
ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত-রায়, ভোট কি অবৈধ? প্রশ্ন আদালতের

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, পুরনো বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পরেও যে সব অঞ্চল, ব্লক বা জেলায় নতুন বোর্ড গঠন করা সম্ভব হবে না, সেগুলির দায়িত্ব বর্তাবে বিডিও, এসডিও এবং ডিএম-দের কাঁধে। বিডিও-রা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাজ দেখভাল করবেন। ঝুলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতিগুলির কাজ দেখভাল করবেন মহকুমাশাসক অর্থাৎ এসডিও-রা। আর যে সব জেলা পরিষদের বোর্ড গঠন আটকে যাবে, জেলাশাসক, অর্থাৎ ডিএম সেই জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে আপাতত দায়িত্ব পালন করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তিন মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হচ্ছে। অর্থাৎ সরকার আপাতত ধরেই নিচ্ছে যে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিবাদের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন
সাগর, দক্ষিণেশ্বর, তারাপীঠ... অটলের অস্থি নিয়ে রাজ্যের পাঁচটি প্রান্তে যাচ্ছে বিজেপি

আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। দেশের এবং রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ এখন যেমন, তাতে এই লোকসভা নির্বাচন তৃণমূলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই নির্বাচনে সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সচল রাখা তৃণমূলের জন্য খুব জরুরি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সব সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করেছেন, সেগুলির অধিকাংশের রূপায়ণই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরের মাধ্যমে হয়। তাই তৃণমূল তথা রাজ্য সরকার চাইছে, মামলার জেরে বোর্ড গঠন আটকে গেলেও পঞ্চায়েতের কাজ যেন আটকে না যায়। প্রশাসক বসিয়েই কাজ সচল রাখার বন্দোবস্ত সেরে রাখছে রাজ্য সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন