পলামুর কাছে জঙ্গলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হত দুষ্কৃতী আমন সাহু। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখার (এটিএস) গুলিতে নিহত কুখ্যাত দুষ্কৃতী আমন সাহু। ছত্তীসগঢ়ের একটি জেলে বন্দি ছিলেন আমন। এনটিপিসির আধিকারিক কুমার গৌরবের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রায়পুরের জেলে থেকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে রাঁচীতে নিয়ে আসা হচ্ছিল আমনকে। পলামুর কাছে পুলিশের গাড়ি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। পুলিশের দাবি, সেই সুযোগে আমন আগ্নেয়ান্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এমনকি, এটিএস সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। পাল্টা গুলি চালায় এটিএস। সেই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দুষ্কৃতী আমনের।
পুলিশ সূত্রে খবর, খুন, তোলাবাজি, অপহরণ-সহ শতাধিক মামলা রয়েছে এই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ় এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও বহু মামলা রয়েছে। এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে জোর করে ৫০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে বালিগঞ্জ থানাতেও আমনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। দিন কয়েক আগে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে এনটিপিসির এক আধিকারিক খুনের পর রাঁচী থেকে দিল্লি পর্যন্ত হুলস্থুল পড়ে যায়। কী ভাবে ওই আধিকারিক খুন হলেন, কারা এই খুনে জড়িত, তা নিয়ে ঝাড়খণ্ডে পুলিশের কাছে স্পষ্ট কোনও তথ্য ছিল না। ফলে ঝাড়খণ্ড পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
যখন এনটিপিসির আধিকারিক খুনে ঝাড়খণ্ড পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেই সময় রাজ্য পুলিশের ডিজি অনুরাগ গুপ্ত দাবি করেন, এই খুনের ছক কষা হয়েছিল জেলের ভিতর থেকেই। তিনটি দুষ্কৃতী গ্যাং বিকাশ তিওয়ারি, আমন শ্রীবাস্তব এবং আমন সাহুর দিকেই অভিযোগের তির ঘোরায় পুলিশ। সোমবারই ঝাড়খণ্ডের ডিজি জানান, এই হত্যা মামলায় জেরা করার জন্য রায়পুর পৌঁছেছে এটিএস। সেখানে জেলে বন্দি ছিলেন আমন সাহু। মঙ্গলবারই খবর আসে, এটিএস জওয়ানের হাত থেকে ইনসাস রাইফেল ছিনিয়ে পালনোর চেষ্টা করছিলেন আমন। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও চালান। পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৭ বছর বয়স থেকেই অপরাধের দুনিয়ায় প্রবেশ আমনের। ঝাড়খণ্ডেই তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা রয়েছে। মাওবাদীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাঁর। ২০১৩ সালে নিজের একটি দল তৈরি করেন। সেই দল কয়লা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলাবাজি করত। আড়াই বছর আগে ছত্তীসগঢ়ের কোরবায় গুলি চালিয়ে কয়েক জনকে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ১৭ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে অপরাধের দুনিয়ায় দ্রুত উত্থান হয় আমনের। লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল বলে দাবি পুলিশের।