‘আর কিছু দাবি করবেন না, আমি দিয়েছি, আপনারা এ বার দিন’

লোকসভা ভোটে দলের ফল খারাপ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল, উন্নয়ন প্রকল্পের রপায়ণ নিয়ে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, নবান্নের ঘোষিত কর্মসূচি ১০০ % নীচেতলায় পৌঁছচ্ছে না। মধ্যমগ্রামে জেলার প্রশানসিক পর্যালোচনা বৈঠকে সেই আঙ্গিকেই আলোচনার সুর বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা:

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

অনেক দিয়েছি। এবার বলুন আপনারা কী দেবেন?

Advertisement

এই প্রশ্ন করেই লোকসভা ভোট পরবর্তী জেলা সফর শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আর কিছু দাবি করবেন না। অনেক করে দিয়েছি। এবার বলুন, আপনাদের কাছে আমি কী দাবি করতে পারি?’’

লোকসভা ভোটে দলের ফল খারাপ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল, উন্নয়ন প্রকল্পের রপায়ণ নিয়ে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, নবান্নের ঘোষিত কর্মসূচি ১০০ % নীচেতলায় পৌঁছচ্ছে না। মধ্যমগ্রামে জেলার প্রশানসিক পর্যালোচনা বৈঠকে সেই আঙ্গিকেই আলোচনার সুর বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরুর আগেই জেলার সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি জানতে চান, ‘‘আপনারা সকলে সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জানেন তো?’’

Advertisement

বিধানসভা ভোটের আগে দু’বছরে নতুন করে প্রকল্প চালুর বদলে তিনি যে চালু প্রকল্পগুলির পূর্ণসদ্ব্যবহার চান, এদিন তা স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বসিরহাটের কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি না সরিয়ে রাস্তা তৈরি হওয়ায় প্রশ্ন করেছিলেন জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘টাকা খরচের আগে পরিকল্পনা না করলে সরকারের ক্ষতি হয়। সরকারের টাকা নেই। সরকার কোথায় পাবে?’’ সরকারি কর্মচারীদের বেতন সংক্রান্ত কমিশনের সুপারিশের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগে ২০০-৪০০ টাকায় চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন বেতন চেয়ে তাঁরাই বসে পড়ছেন। আমি তো দিতে চাই। কোথায় পাব টাকা?’’

এদিনের বৈঠকে শুরুতে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন কর্মসংস্থান প্রকল্পের কথা জানান। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, যাঁদের কাজ পাওয়ার কথা তাঁরাই পাচ্ছেন কি না। সেই সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির অবস্থা নিয়েও জানতে চান জেলাশাসকের কাছে। তারপরই সরকারের আবাস প্রকল্প, রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প ফেলে রাখা যাবে না বলেও সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন দফতরের সচিবদেরও ‘ইগো’ ছেড়ে সরকারি কাজে পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করতে বলেছেন।

তফসিলি জাতি উপজাতিদের শংসাপত্র বিলির কাজে স্বচ্ছতা ও গতি আনতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘নীচেরতলায় সার্টিফিকেট বিলিতে সময় লাগছে। এ ব্যাপারে জন্ম সংক্রান্ত প্রমাণপত্রই যথেষ্ট। কাজ ফেলে রাখা হচ্ছে। আবার অন্যভাবে হচ্ছে।’’ একইভাবে রেশনে বরাদ্দ মাল কম দেওয়া হলে ডিলারদের লাইসেন্স সাসপেন্ড করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সরকার আপনাকে টাকা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষকে কম দিয়ে পদক্ষেপ করতে বাধ্য করবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন