এ বার তৎকাল পাসপোর্টে আর ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট লাগবে না বলে জানিয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক।
অভিযোগ আসছিল অনেক দিন ধরেই। তৎকালে পাসপোর্টের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট’ জাল হচ্ছে।
এ বার তৎকালে আবেদনের সঙ্গে সেই ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট লাগবে না বলে জানিয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার কলকাতায় রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার বিভূতিভূষণ কুমার জানিয়েছেন, এ দিন থেকেই এই নিয়ম বলবৎ করা হয়েছে।
খুব তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট পেতে যাঁরা তৎকালে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতেন, তাঁদের আবেদনপত্রের সঙ্গে এই ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট লাগত। সরকারের উপ সচিব বা যুগ্ম কমিশনার পদ বা তার চেয়ে উচ্চপদের কোনও অফিসারের কাছ থেকে সেই ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট নিতে হত। সংশ্লিষ্ট অফিসার নিজের সরকারি প্যাডে লিখে দিতেন যে আবেদনকারীকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন।
এমন প্রচুর আবেদনকারী রয়েছেন, যাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে এমন উচ্চপদস্থ কোনও অফিসারকে চেনেন না। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই ওই ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য তাঁরা দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধ্য হতেন। উচ্চপদস্থ অফিসারদের জাল প্যাডে জাল সই করা ওই সার্টিফিকেট দিয়ে আবেদন করা হত বলেও অভিযোগ উঠেছে। পাসপোর্ট অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, এমন শংসাপত্র পেয়ে যখন পাল্টা তাঁরা যাচাই করতে গিয়েছেন, তখন আকাশ থেকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ওই কর্তা। জানিয়েছেন, তিনি এমন কোনও সার্টিফিকেট দেননি। এমনকী, এ জন্য থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এ কারণে, বিগত কয়েক বছরে এই ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন অনেক অফিসার। চেনা কাউকেও ওই সার্টিফিকেট দিতে চাইতেন না তাঁরা।
আরও পড়ুন:
কলকাতায় তৈরি হবে নয়া বিদেশ ভবন
একশো দিনে আরও ৯০০ কোটি বরাদ্দ করল কেন্দ্র
বিভূতি কুমার এ দিন জানিয়েছেন, এ বার থেকে ওই সার্টিফিকেটের বদলে আধার কার্ড বা আধার কার্ডের আবেদন করা হয়েছে এমন তথ্যপ্রমাণ দিলেই হবে। সঙ্গে ‘তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই’— আবেদনকারীকে এমন স্বঘোষিত নথিও (অ্যানেক্সচার ই) জমা দিতে হবে। তা ছাড়া ঠিকানা, বয়স এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত যে নথিপত্র আগে লাগত, তা-ও লাগবে। অবিলম্বে আবেদনকারীকে বিদেশে যেতে হবে, এমন কোনও আমন্ত্রণপত্র বা নথিও এর আগে তৎকাল আবেদনের সময়ে চাওয়া হত। এ বার থেকে সেই প্রমাণও চাওয়া হবে না বলে বিভূতি জানিয়েছেন।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, এখন তৎকাল পাসপোর্টের আবেদন করার তিনটি কাজের দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে আবেদনকারীর ঠিকানায়। আবেদনকারী পাসপোর্ট পাওয়ার পরে পুলিশি তদন্ত হবে। সেই তদন্তের রিপোর্ট পরে পুলিশ সময় মতো জমা দেবে পাসপোর্ট অফিসে। এই মুহূর্তে কলকাতায় রুবিতে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (পিএসকে) থেকে দিনে ১০০টি তৎকাল পাসপোর্টের আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে। বহরমপুরে পিএসএকে-র ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ২০। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়িতে রাজ্যের তৃতীয় পিএসকে-টি খোলা হচ্ছে। সেখানেও প্রতি দিন কিছু তৎকাল পাসপোর্টের আবেদন মঞ্জুর করা হবে।