ইন্টার্নরা মারমুখী, সেটাই উদ্বেগের

স্বাস্থ্য দফতর ও চিকিৎসক মহলের একটি বড় অংশ জানাচ্ছেন, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের উপরে হামলা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু হবু চিকিৎসকেরা পাল্টা যা করেছেন, সেটা আরও বেশি আশঙ্কার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

শুধুমাত্র কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ-অবস্থানে বসাই নয়, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নরা সোমবার পুলিশের হাত থেকে এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তি ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত এক ইন্টার্নকে চড় মেরেছিলেন বলে অভিযোগ। যে ভাবে ইন্টার্নরা ওই ব্যক্তির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাতে পুলিশ কোনওক্রমে বিজয় সিংহ নামে ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিয়ে না-গেলে বিপদ ঘটতে পারত বলে মেনে নিয়েছেন এনআরএস কর্তৃপক্ষও। গোটা বিষয়টি জানতে পেরে হবু চিকিৎসকদের আচরণে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরও।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, মারমুখী ইন্টার্নদের হাত থেকে বিজয়বাবুকে ছাড়িয়ে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। তখন একদল ইন্টার্ন সেই ঘরের দরজার কাচ ভেঙে ভিতরে ফর্মালিনের একাধিক বোতল ছুড়ে দেন। তাতেই ঝাঁঝালো ধোঁয়া বেরিয়ে সকলের চোখ জ্বালা করতে থাকে।

স্বাস্থ্য দফতর ও চিকিৎসক মহলের একটি বড় অংশ জানাচ্ছেন, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের উপরে হামলা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু হবু চিকিৎসকেরা পাল্টা যা করেছেন, সেটা আরও বেশি আশঙ্কার। কারণ, যাঁরা হামলা করেছিলেন তাঁরা আর্থ-সামাজিক-শিক্ষাগত দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া। তাঁদের বিবেচনার অভাব থাকতে পারে। কিন্তু চিকিৎসক হতে চলা এই মেধাবী, তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেণি বা পরিবার থেকে আসা ছেলেমেয়েদের থেকে সাধারণ ভাবে বেশি স্থিরতা, সুস্থ বোধ ও বিবেচনা প্রত্যাশিত। উত্তেজনার সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা এবং আইন হাতে তুলে না-নেওয়াই তাঁদের কাজ। সেই জায়গায় তাঁরা যেটা করেছেন, সেটা ‘গুন্ডাগিরি’— মন্তব্য এক স্বাস্থ্যকর্তার।

Advertisement

সোমবার দুপুর থেকে হাসপাতালে টানা কর্মবিরতি চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরে তা তোলেন ইন্টার্নরা। ওই ঘটনায় ধৃত ব্যক্তিকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ইন্টার্নদের দাবি মেনে হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তাও বাড়ছে। কিন্তু যে ভাবে ইন্টার্নরা ইমার্জেন্সি ভবনের এক দিকের গেটে তালা ঝুলিয়ে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের সমস্যায় ফেলেছিলেন এবং যে ভাবে এক জনকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে মারধর করতে চেয়েছিলেন, তাতে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তুলেছেন অনেকে। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়ের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন