Suvendu Adhikari

শুভেন্দুদের চাই না, ক্ষোভের কাঁটায় বিদ্ধ পদ্ম

Advertisement

সৌমেন মণ্ডল

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:১৭
Share:

নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

‘দিদি’র জনসভার দিনই ‘দাদা’র দল বিজেপি-র ক্ষোভ বেআব্রু হল নন্দীগ্রামের মাটিতে। শুভেন্দু অধিকারীর পুরনো বিধানসভা এলাকাতেই তাঁর ও তাঁর অনুগামী দলবদলুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করে বিক্ষোভ দেখালেন গেরুয়া শিবিরের পুরনো কর্মীরা।

Advertisement

সোমবার নন্দীগ্রামের তেখালিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা ছিল। গোকুলনগর মাঠে সেই সভার আগেই এ দিন সকালে বিজেপি-র আদি-নব্য বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। শুভেন্দু এবং তাঁর মতো তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতাদের কেন বিজেপিতে জায়গা দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে শামিল হন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-১ পঞ্চায়েতের সুবদি গ্রামের বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। শুভেন্দুরা বিজেপিতে থাকলে নন্দীগ্রামের ১২ জন বুথ সভাপতি পদত্যাগ করবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু। ক্রমে পূর্ব মেদিনীপুরে তাঁর অনুগামী একাধিক তৃণমূল নেতা পদ্ম পতাকা হাতে নিয়েছেন। আরও কেউ কেউ তৃণমূল ছাড়তে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে। এতেই খেপেছেন জেলা বিজেপি-র পুরনো সদস্যদের একাংশ। নন্দীগ্রাম-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আদি-নব্য সংঘাত শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। গত ৮ জানুয়ারি শুভেন্দুর নন্দীগ্রামের সভাতেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামনে এসেছে। কার্যত ভন্ডুল হয়েছে সেই সভা।

Advertisement

এ দিন সুবদি গ্রামের প্রতিবাদ মিছিলে শামিল নন্দীগ্রামের পুরনো বিজেপি নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, যে সব দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এতদিন লড়াই করেছেন, তাঁরাই আজ সহকর্মী হচ্ছেন। একই মঞ্চে তাঁদের পাশে বসা সম্ভব নয়। স্থানীয় বিজেপি নেতা নান্টু মাইতির ক্ষোভ, ‘‘এখন যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, একসময় বিজেপি করার অপরাধে তাঁরা আমাদের কর্মীদের মারধর করতেন। বহু মিথ্যা মামলা দিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে। এখনও সেই সব মামলা আদালতে চলছে। ওঁরা বিজেপিতে আসছেন বলেই আমরা বিজেপি ছেড়ে দিচ্ছি।’’

নান্টুদের ক্ষোভ মূলত শুভেন্দু ও তাঁর পিছু পিছু বিজেপিতে আসা নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দিন্দা, দলবদলু নেতা প্রভাস ভুঁইয়া, পবন গায়েনদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে রেশন-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সঞ্জয়ের গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরারা আন্দোলন করেছেন। বাকিদের বিরুদ্ধেও ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। ফলে, তাঁদের বিজেপিতে আসা কিছুতেই মানতে পারছেন না এই পুরনো কর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি হচ্ছে ভারতীয় যাত্রা পার্টি। ক্ষমতাই না আসতেই ডামাডোল শুরু হয়ে গিয়েছে। আশা করব, আগামী দিনে নন্দীগ্রামের বিজেপি কর্মীরা সব তৃণমূলে চলে আসবেন।’’ বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পালের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘নন্দীগ্রামে আমাদের সংগঠন বাড়ছে। কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। আলোচনায় সে সব মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন