State news

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রণক্ষেত্র স্কুল, ইসলামপুরে গুলিতে মৃত ১ ছাত্র

স্কুল চত্বরে পুলিশ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক আইটিআই পড়ুয়ার। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাঁড়িভিট হাইস্কুলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:১০
Share:

গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকারের। —ফাইল চিত্র।

স্কুল চত্বরে পুলিশ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক আইটিআই পড়ুয়ার। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাঁড়িভিট হাইস্কুলে। সংঘর্ষে পুলিশ ও পড়ুয়া মিলিয়ে আরও ৯ জন আহত হয়েছে।

Advertisement

ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটা সমস্যা চলছিল। সম্প্রতি তিনজন শিক্ষক নিযুক্ত হলেও তাঁদের নিয়োগের বিরোধিতা করেন পড়ুয়ারা। তাঁরা সেই শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ স্কুলে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। নবনিযুক্ত শিক্ষকরা উর্দু ভাষার। পড়ুয়াদের দাবি, ওই স্কুলে উর্দুর ছাত্র-ছাত্রীই নেই। তারা অন্য বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবি করে। তদের দাবি, স্কুল প্রাথমিক ভাবে আশ্বাস দিয়েছিল যে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে না।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্থানীয় থানার পুলিশ ওই তিন শিক্ষককে নিয়ে যান স্কুলে। কিন্তু তাঁদের ঢুকতে দিতে অস্বীকার করেন পড়ুয়ারা। তারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুলিশ তাদের সরাতে গেলে শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ। কয়েক মূহূর্তের মধ্যে সেই সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। পুলিশের অভিযোগ, পড়ুয়ারা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টি করতে শুরু করে। প্রথমে পিছু হটে পুলিশ। খানিক সময় পরে আশ পাশের বিভিন্ন থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস এবং রবার বুলেট ছুঁড়তে শুরু করে মারমুখী পড়ুয়াদের দিকে। কার্যত রণক্ষেত্রর চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। পড়ুয়া এবং পুলিশ দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হন। ৩ জন পুলিশকর্মী ছাড়াও আরও ৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষের মধ্যেই রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন এক তরুণ। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ওই তরুণ। তাঁকে রাজেশ সরকার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। বর্তমানে ইসলামপুর আইটিআই কলেজে পাঠরত। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণের।

আরও পড়ুন: আইএসের ইন্ধনে জেহাদ করতে এ রাজ্য থেকেও তরুণদের মধ্যে কাশ্মীরে যাওয়ার ঝোঁক বেশি

পুলিশ যদিও গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তাঁরা দাবি করেছেন যে রবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছাড়া তাঁরা কিছু ব্যবহার করেননি। এই ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী বন্দুক বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে না বলে জানিয়েছেন, এমনটাই জানিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাহলে রাজেশ কার গুলিতে মারা গেলেন সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও গাফিলতি ছিল না তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী । ঘটনার জেরে সাময়িক ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডি আই-কে। তাঁর জায়গায় আপাতত প্রাথমিক বিভাগের ডিআই দায়িত্ব সামলাবেন বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

এই ঘটনার জেরে শনিবার সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই সারা রাজ্যে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। পাশাপাশি শুক্রবার বিজেপি ১২ ঘণ্টা ইসলামপুর বন্‌ধের ডাক দিয়েছে এই ঘটনার প্রতিবাদে।ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে বন্‌ধ ব্যর্থ করার আবেদন রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় আরএসএসের কোনও ভূমিকা থাকলে তা রেয়াত করা হবে না বলেও জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন