দুর্ঘটনা: আসানসোলে বিয়েবাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় হত মহিলা। নিজস্ব চিত্র
নাচগানে জমে উঠেছিল বিয়েবাড়ির আসর। হঠাৎ গুলির আওয়াজে ছন্দপতন। লুটিয়ে পড়লেন এক মহিলা। পরপর গুলিতে আহত হলেন আরও দু’জন। আসানসোলে ওই বিয়েবাড়িতে মত্ত অবস্থায় গুলি চালানোর অভিযোগে নিমন্ত্রিত এক যুবককে বেধড়ক মারধরের পরে পুলিশে দেওয়া হয়।
আসানসোল দক্ষিণ থানার কাকরসোলের বাউরিপাড়ায় শনিবার রাতে পাত্র সাগর বাউরির পিসি অনিতা বাউরি (৩৬) ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁর বুকে গুলি লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি পাত্রের ভাই কিসান বাউরি। তলপেটে গুলি লেগে জখম হয় লক্ষ্মী বাউরি নামে এক কিশোরী।
বছর চারেক আগে উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে এক বিয়ের আসরে গুলিতে খুন হন পাত্র। পাত্রীর ‘প্রাক্তন প্রেমিক’ গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। গণপ্রহারে মারা যান ওই যুবকও। তবে এ দিন অলোক সাঁই নামে ওই যুবক কেন গুলি চালাল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। শত্রুতার জেরেই এমনটা হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। ধেমোমেনের বাসিন্দা অলোক তার দাদা রাজু সাইয়ের মোবাইলের টাওয়ার দেখভালের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কিসান সেখানেই কাজ করেন। সেই সূত্রেই দাদার বিয়েতে অলোককে নিমন্ত্রণ করেছিলেন কিসান। শনিবার ছিল বউভাতে। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে ডিজে বক্স বাজিয়ে হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলে। নাচে সামিল হয় অলোকও। অভিযোগ, আচমকাই সে একটি রিভলভার বের করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। অনিতাদেবী ও লক্ষ্মী গুলিবিদ্ধ হন। অলোককে বাধা দিতে গিয়ে গুলি খান কিসান। সূত্রের খবর, অলোকের রিভলভারের গুলি শেষ হতেই তাকে ধরে মারধর শুরু করে ক্ষুব্ধ জনতা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ কর্তারা। তবে আগ্নেয়াস্ত্রটি মেলেনি।
ঘটনার পরে বিয়েবাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাগর বলেন, ‘‘অলোককে ভাইয়ের বন্ধু বলে চিনি। কেন এমন করল, বুঝতে পারছি না!’’ পুলিশ জানায়, অলোক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। রবিবার তাকে জেরা করা হয়। পুলিশের দাবি, সে গুলি চালানোর কথা স্বীকার করছে। কিন্তু, কারণ নিয়ে মুখ খোলেনি। তবে কিসানের সঙ্গে কোনও শত্রুতা থেকেই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও পুলিশের অনুমান।