তৃণমূল বলছে কী! আসছে কটাক্ষও

রাতারাতি পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা করছেন তাঁরা এক বিন্দুতে দাঁড়িয়েই। আবার সেই মোদীর সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধছেন তাঁর বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৪
Share:

রাতারাতি পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা করছেন তাঁরা এক বিন্দুতে দাঁড়িয়েই। আবার সেই মোদীর সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধছেন তাঁর বিরোধীরা। সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতাদের সমস্বর প্রশ্ন, মোদী না হয় চমক দিয়েছেন। কিন্তু কালো টাকা নিয়ে তৃণমূল সুর চড়াচ্ছে কোন মুখে?

Advertisement

বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের আগে সারদা ও নারদ-কাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা। তার জেরে মন্ত্রী-সাংসদদের জেলে যেতে হয়েছে। রাস্তায় নেমে হইচইও হয়েছে বিস্তর। তার পরেও নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে পেরেছেন
মমতা। কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পরেই আবার শুরু হয়েছে বিপুল বেগে বিরোধী ভাঙিয়ে নেওয়ার খেলা। বিরোধীদের হাতে থাকা একের পর এক পুরসভা-পঞ্চায়েত দখল হয়েছে, বিধায়কেরা শাসক দলে নাম লিখিয়েছেন। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, জনতার রায় টাকার জোরেই উল্টে নিয়েছে শাসক দল! এ সব কাজ কি কালো টাকার খেলা ছাড়া হয়েছে, প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী যেমন বলছেন, ৫০০ ও এক হাজার টাকার নোট বাতিল হওয়ায় সব চেয়ে অসুবিধায় পড়েছে তৃণমূলই।

Advertisement

অধীরবাবুর কথায়, ‘‘সরকারের এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে সাধারণ ও গরিব মানুষ বেজায় অসুবিধায় পড়েছেন ঠিকই। কিন্তু মাথা খারাপ হয়ে
গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর! তিনি রাতে ঘুমোতে পারেননি। সারদা-সহ বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার কোটি কোটি বেআইনি টাকা তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা কোথায় সরাবেন, তা ভেবে ঠিক করতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়াতেই তা স্পষ্ট।’’

প্রদেশ সভাপতির অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পুরসভা যে ভাবে তৃণমূল দখল করেছে, মোদী নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আগে নিলে তা করা যেত না! অধীরবাবু বলছেন, ‘‘কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাঁরা দলবদল করেছেন, তাঁরা সম্পত্তি না করে সেই টাকা যদি ঘরে রাখেন, তা হলে তা পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প রাস্তা রইল না। একেই বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে!’’

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না! উনি কালো টাকা নিয়ে কথা বলেন কোন মুখে? ওঁর দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা মুঠো মুঠো কালো টাকা আত্মসাৎ
করেছেন! আর সে সব জেনেও উনি তাঁদের পদে বহাল রেখেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় গুরুত্ব দেওয়ার
মানে হয় না!’’

সূর্যবাবুর সুরেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও বলেছেন, ‘‘কালো টাকা নিয়ে হঠাৎ কেউ কেউ মোদী-বিরোধী হয়ে গিয়েছেন! চিট ফান্ডের টাকা লুঠ করেও যাঁরা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের তো অসুবিধা হবেই!’’

তাঁর বক্তব্য, ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা তো বিপদে ছিলেনই। কংগ্রেসের প্রতীকে জিতেও কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাঁরা দলত্যাগ করেছেন, তাঁরাও এখন বিপাকে পড়লেন। কারণ, ওই ‘কালো টাকা’ এখন কাজে লাগানো কঠিন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন