দেবলীনা ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
দেওয়ালির রাতে সবাই তখন আতসবাজির রোশনাইয়ে মাতোয়ারা। ব্যস্ত বাজি ফাটানোয়। সেই সময়ে একপ্রকার নিঃশব্দেই বিশেষ ভাবে সক্ষম এক তরুণীর দান করা অঙ্গে ফিরল তিন জনের প্রাণ। দেওয়ালির রাতে তাঁর চোখের আলোয় অন্য এক শহরবাসীর অন্ধকার কেটে গেল চির দিনের মতো।
সোনারপুরের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের দেবলীনা ঘোষ জন্ম থেকেই বিশেষ ভাবে সক্ষম। মাত্র আড়াই মাস বয়সে মাথায় জল জমে যাওয়ায় সমস্যার শুরু। ওই সময় তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হননি দেবলীনা। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন তিনি।
অরুণ ঘোষ এবং কৃষ্ণাদেবীর একমাত্র সন্তান ছিলেন দেবলীনা। সম্প্রতি দেবলীনার মাথায় ফের যন্ত্রণা শুরু হয়। গত রবিবার চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভর্তি করা হয় আমরি হাসপাতালে। বুধবার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন দেবলীনার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়েছে। এর পর তাঁর পরিবারের সদস্যেরা সিদ্ধান্ত নেন, মেয়ের চোখ-সহ অন্যান্য অঙ্গ তাঁরা দান করবেন।
আরও পড়ুন: জিন থেকে জ্যাজে পারদর্শী, সত্যজিতের ভক্ত নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এবার কলকাতায়
আরও পড়ুন: পুলিশকে ‘হেনস্থা’, ধৃত হেলমেটহীন আরোহী
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দেবলীনার দু’টি কিডনি, হৃদযন্ত্র, যকৃৎ এবং চোখের কর্নিয়া ‘গ্রিন করিডর’ করে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসএসকেএম হাসপাতালে দেবলীনার একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে হুগলির ধনেখালির বাসিন্দা অনিতা ঘোষের দেহে। অন্য কিডনিটি পেয়েছেন হুগলির পাণ্ডুয়ার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কেয়া দাঁ। বাইপাসের ধারে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে বহরমপুরের তনয়া পণ্ডিতের শরীরে দেবলীনার হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন হয়েছে। যকৃৎও এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা প্রতিস্থাপন যোগ্য ছিল না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর জানতে পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগ।)