ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গে পদ্মাবতীর বাহিনীকে স্বাগত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ-ও জানালেন, অন্য রাজ্যে যাই হোক না কেন, ভংসালী ও তাঁর পদ্মাবতীর জন্য গর্বিত বাংলা।
‘‘ছক কষে একটি রাজনৈতিক দল ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতাটুকুও খর্ব করছে’’— কিছু দিন আগেই টুইট করেছিলেন মমতা। শুক্রবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁরা (সঞ্জয় লীলা ভংসালী ও চিত্রনির্মাতা সংস্থা) যদি অন্য রাজ্যে পদ্মাবতী দেখাতে না-ও পারেন, আমরা এখানে আলাদা করে ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করব। পশ্চিমবঙ্গ ভীষণ খুশি হবে, গর্বও বোধ করবে। আমরা দেখব যাতে ওদের কোনও অসুবিধা না হয়।’’
ছবিতে রানি পদ্মাবতীর নাচ ও আলাউদ্দিন খিলজির স্বপ্নে রানির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। যদিও ভংসালী বারবার দাবি করেছেন, দ্বিতীয় দৃশ্যটি ছবিতে নেই। তাতে ক্ষোভ কমেনি। দাবি ওঠে, ছবি থেকে বিতর্কিত অংশ বাদ না দিলে পদ্মাবতীর মুক্তি আটকে দেওয়া হবে। রাজপুত করণী সেনার বিক্ষোভে একে-একে যোগ দেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে থেকে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার, গুজরাতে বিজেপি সরকার থেকে উমা ভারতীর মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ভংসালীর ২০০ কোটি টাকার ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানান পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহও। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, ‘‘সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিলেও তাঁর রাজ্যে পদ্মাবতী মুক্তি পাবে না।’’ এই আন্দোলনে সর্বশেষ সংযোজন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। ২২ নভেম্বর তিনি ঘোষণা করেন, গুজরাতে ভোটের মুখে পদ্মাবতীকে মুক্তি দেওয়া যাবে না।
মমতা অবশ্য বরাবরই ঘটনার সমালোচনা করে এসেছেন। শুক্রবারও তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সকলের উচিত একজোটে প্রতিবাদ জানানো।’’
ওই একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। লালনের মতো ইতিহাস-ভিত্তিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনিও। সে প্রসঙ্গ টেনে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘এ ভাবে তো পরিচালককে অপমান করা হচ্ছে...। এ ভাবেই চললে ইতিহাস-নির্ভর ছবি বানানো বন্ধ করে দেবেন উনি। যে কোনও সৃষ্টিশীল মানুষের নিজস্ব ভাবনাচিন্তা প্রকাশ করার অধিকার থাকা উচিত। না হলে ভবিষ্যতে কেউ আর লালন ফকিরকে নিয়েও ছবি তৈরি করবে না!’’