Pakistani Woman Arrested In West Bengal

চন্দননগরে গ্রেফতার পাকিস্তানি! ৪৫ বছর আগে রাওয়ালপিন্ডি থেকে বাংলায় আসেন ফতেমা

সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গিহানার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৫ ১৮:৫৪
Share:

বাবার সঙ্গে আশির দশকে ভারতে এসেছিলেন ফতেমা বিবি। সেই থেকে রয়েছেন এ দেশে। —নিজস্ব চিত্র।

হুগলি থেকে গ্রেফতার পাকিস্তানি এক মহিলা। আদতে রওয়ালপিন্ডির বাসিন্দা ফতেমা বিবি গত ৪৫ বছর ধরে চন্দননগর কুঠির মাঠ এলাকায় থাকেন। তাঁর স্বামী-সন্তানও এ দেশে রয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৮০ সালে পর্যটন ভিসা নিয়ে বাবার সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন ফতেমা। ১৯৮২ সালে মুজফ্‌ফর মল্লিক নামে চন্দননগরের এক বেকারি মালিকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। যদিও পুলিশের খাতায় ভিসা নিয়ে ভারতে আসার এক বছর পরেই নিখোঁজ ছিলেন ফতেমা। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গিহানার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। যাঁরা পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের খোঁজ শুরু হয়েছে। এই আবহে শনিবার চন্দননগরের কুঠির মাঠের পাশে মসজিদের পিছনে মুজফ্ফর মল্লিকের দোতলা বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ফতেমাকে।

ফতেমার গ্রেফতারিতে বিস্মিত প্রতিবেশীরা। তাঁদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ওই মহিলা যে পাকিস্তানি সেটা তাঁরা জানতেন না। আইনি জটিলতা কাটিয়ে সকলেই অবশ্য ফতেমার মুক্তি চান। ফতেমার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, পাকিস্তানে তাঁদের কোনও আত্মীয় থাকেন না আর। সকলেই ভারতে রয়েছেন। ফতেমার স্বামীর দাবি, হুগলির নালিকুলে স্ত্রীর পূর্বপুরুষের বাড়ি। সেখানেই জন্মেছেন ফতেমা। পরে কাজের সূত্রে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি চলে গিয়েছিলেন ফতেমার বাবা। তবে আশির দশকেই সে দেশের পাঠ চুকিয়ে ভারতে ফিরে আসেন সকলে। মুজফ্ফরের কথায়, ‘‘৬০ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে স্ত্রীর। রোজ অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয় ওকে। নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে হয়। কিছু দিনের মধ্যে হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের কথা। ওকে যেন ছেড়ে দেয় পুলিশ।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁরা চন্দননগর কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। আধার, প্যান কার্ড আছে। ফতেমা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। কিন্তু এত দিনেও তা হয়নি।

Advertisement

শেখ শাহ আলম নামে এক প্রতিবেশীর মন্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় যারা অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই ঘটনা কোনও মুসলিম সমর্থন করে না। কিন্তু তাই বলে সাধারণ মানুষের উপর এমন আক্রমণ যেন না হয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘উনি তো এক দিন আগে এ দেশে আসেননি। যাঁরা সম্প্রতি এসেছেন, তাঁদের ফেরানো হোক। কিন্তু যাঁরা ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে এসে এখানে আছেন, তাঁদের কেন পাঠানো হচ্ছে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement