বিধানসভা নির্বাচনে মদন মিত্রের পরাজয়ের দায়ও এ দিন ঘুরিয়ে সিবিআই-এর উপরেই চাপিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মদন মিত্রের জামিনে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল। আলিপুর আদালত থেকে জামিনে খবর আসার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দলের তরফ থেকে এবং বিদেশ সফররত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে আমরা মদন মিত্রকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ দীর্ঘ কারাবাসের পর মদনের এই মুক্তি দলের জন্য ‘খুশির দিন’, মন্তব্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
মদন মিত্রের জামিনের খবর ছড়াতেই ভবানীপুরে তাঁর বাড়ির সামনে উৎসব শুরু হয়ে যায়। শুরু হয় আবির খেলা। উচ্ছ্বাস যে শুধু মদন মিত্রের নিজের পাড়ায়, তা কিন্তু নয়। গোটা তৃণমূলই যে মদনের জামিনে উচ্ছ্বসিত, তা স্পষ্ট করে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আজকে আমাদের খুব খুশির দিন। আমাদের সহকর্মী মদন মিত্র ৬২৯ দিন জেলে কাটানোর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আমরা দলের পক্ষ থেকে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে মদন মিত্রের সুস্থ জীবন, সুস্বাস্থ্য কামনা করছি এবং তাঁর পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ মদন মিত্রকে যে ভাবে ৬২৯ দিন জেলে কাটাতে হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন তার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘‘খুনের আসামিকেও জামিন দেওয়া হয়। সেখানে মদন মিত্রকে ৬২৯ দিন জেলে কাটাতে হল। সারদা কাণ্ডের মূল অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মদন মিত্রকে জামিন দেওয়া হচ্ছিল না। এ ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত, আমরা দুঃখিত, আমাদের বলার কোনও ভাষা নেই।’’
কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে মদন মিত্রের পরাজয়ের দায়ও প্রকারান্তরে সিবিআই-এর উপরে চাপিয়েছেন পার্থবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মদনের সঙ্গে এমন আচরণ করা হল যে তিনি ভোটে দাঁড়ালেও প্রচার করতে পারলেন না। তাতে দলের ক্ষতি হয়েছে, মদনের নিজের কেরিয়ারেরও ক্ষতি হয়েছে।’’ দীর্ঘ কারাবাসের মধ্যেও মদন মিত্র দলের পাশে ছিলেন, নেত্রীর পাশে ছিলেন বলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন পর আমাদের সহকর্মী আমাদের কাছে ফিরে এসেছেন। তিনি মানুষের পাশে থাকবেন, আর্তের পাশে থাকবেন। বিগত দিনে তিনি যে ভাবে মানুষের সেবায় কাজ করেছেন, সেভাবেই কাজ করবেন।’’ মদন মিত্রের হয়ে যে আইনজীবীরা আদালতে সওয়াল করেছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন মদন মিত্র, হাইকোর্টে যাচ্ছে সিবিআই
সারদা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত মদন মিত্রের পাশে কি দল তা হলে সব রকম ভাবেই থাকছে? প্রশ্ন উড়ে গিয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। তৃণমূল মহাসচিব বললেন, ‘‘অবশ্যই থাকছে। আবার নতুন করে পাশে থাকার কি আছে? দল তো পাশেই ছিল! না হলে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেওয়া হত নাকি?’’